দুর্নীতির অভিযোগ তুলে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে গত তিন বছর ধরে নরেন্দ্র মোদি সরকার পশ্চিমবঙ্গকে ১ টাকাও ছোঁয়ায়নি বলে বারংবার অভিযোগ জানাতে দেখা গেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূলের সেকেন্ড-ই-কমান্ড সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।। কেন্দ্রের বুধবার এই প্রকল্পের ব্যাপারে এক যুগান্তকারী রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের নির্দেশ, ১ অগাস্ট থেকে ফের ‘একশো দিনের’ প্রকল্প চালু করতে হবে। বুধবার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের মন্তব্য, ‘কোনও কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে অনন্তকালের জন্য ঠাণ্ডা ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া যায় না।’ একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতির এও নির্দেশ, ‘দুর্নীতি রোধে যে কোনও ধরনের শর্ত আরোপ করতে পারবে কেন্দ্র।’
এদিকে এদিন আদালতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয়, যারা প্রকৃতপক্ষে কাজ করেছেন, তাদের বাধা দিতে চায় না কেন্দ্র। সঙ্গে এ প্রশ্নও তোলা হয়, তারা সত্যিই কাজ করেছেন কিনা তা নিশ্চিত করবে কে তা নিয়ে। সঙ্গে এও জানানো হয়, রাজ্য যে বেআইনি ভাবে ব্যবহৃত টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে, তা কেন্দ্রকে ফেরত দিতে হবে। ভবিষ্যতে আবার দুর্নীতি আটকাতে হলে পুরো প্রকল্পের উপর নজরদারি কেন্দ্রের হাতে থাকতে হবে। সে জন্য নোডাল অফিসার রাখতে হবে।
এই প্রসঙ্গে একটা কথা বলতেই হয়, মোট ৫ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা বণ্টনের ক্ষেত্রে দুর্নীতি করা হয়েছিল বলে আদালতে জানিয়েছিলেন কেন্দ্রের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী। নোডাল অফিসারও জানান,তাঁরা পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, মালদহ, দার্জিলিং মতো একাধিক জেলায় সমীক্ষা করে ‘একশো দিনের কাজের’ টাকা বণ্টনের ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন। এই চার জেলা থেকে মোট ২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
এরপর এদিন মামলার শুনানির সময়ে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন,’শুরু থেকেই একটা কথা বলছি, ১০টা আপেলের মধ্যে কয়েকটা পচা হতে পারে, কিন্তু বাকিরা তো স্বচ্ছ।’ আর এই প্রসঙ্গ টেনেই তিনি এও বলেন, ‘যা হয়েছে, সেটা অতীত। কিন্তু প্রায় তিন বছর ধরে প্রকল্প বন্ধ। এবার নতুন করে চালু করতেই হবে। কেন্দ্র এই প্রকল্প স্থগিত রাখতে পারে না।’ সঙ্গে এও বলেন, ‘জুলাই বা অগাস্ট থেকে চালু করা যায় কিনা ভেবে দেখুন।’