জল ছাড়ছে ডিভিসি, উদ্বেগে হাওড়া, হুগলি, ঘাটাল, পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দারা

বর্ষা আসতেই জেলায় জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। এদিকে গত দু’দিন ধরে দামোদর অঞ্চলে টানা বৃষ্টি চলছে। ফলে, জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে ঝাড়খণ্ড থেকে আসা জলের চাপও। মঙ্গলবার রাতে বরাকর উপত্যকায় ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এরপর বুধবারও পূর্ব বর্ধমানের বহু অংশে বৃষ্টি হয়। অন্যদিকে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। ফলে জল ছাড়তে বাধ্য হল ডিভিসি অর্থাৎ দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন। আর সেই কারণেই  প্রশাসন ঘটনার ওপর কড়া নজর রাখছে।  প্রতিটি জেলার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ও জেলা প্রশাসনকে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে।
এদিকে সূত্রে খবর, মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে প্রায় ৩৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া শুরু হয়েছে। ফলে উদ্বেগ বেড়েছে পূর্ব বর্ধমান,হাওড়া, হুগলি ও ঘাটালের বাসিন্দাদের মধ্যে। এর আগে বহুবার এই এলাকায় জল ছাড়ার জেরে বন্যা দেখা গিয়েছে। আরও সমস্যা দেখা দিচ্ছে ঝাড়খণ্ডের তেনুঘাট ও তিলিয়া বাঁধ থেকেও জল ছাড়ার ফলে। সেই জল এসে জমা হচ্ছে মাইথন ও পাঞ্চেতে। ফলে এই দুই জলাধারেও জলস্তর বাড়ছে। বাধ্য হয়েই সেখান থেকেও জল ছাড়া শুরু করেছে ডিভিসি।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর বর্ষার সময়ে ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিতর্ক হয়। ২০২৪ সেই বিতর্ক সংঘাতে পর্যবসিত হয়। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেও অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্যকে না জানিয়ে ডিভিসি জল ছেড়ে দেয়। এর ফলে বহু এলাকা প্লাবিত হয়, ঘরবাড়ি ডুবে যায়, চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত বছরও বহু পরিবারকে ত্রাণশিবিরে থাকতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে মানুষ এখন আরও সতর্ক। মুখ্যমন্ত্রী বহুবার জলাধার সংস্কার ও পলি তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। প্রসঙ্গত, বর্ষা শুরুতেই এত পরিমাণ জল ছাড়া হচ্ছে। এখনও বাকি রয়েছে বর্ষা। ফলে পরবর্তী সময়ে আরও প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়ার ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − eleven =