মাঝরাতে শতাব্দী প্রাচীন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্লস হস্টেলে ভেঙে পড়ল লোহার বিম সহ চাঙড়। হেদুয়ার কাছে এই হস্টেলের ঘরের সিলিংয়ের লোহার বিম ভেঙে পড়ে ঘটে এই বিপত্তি। শুক্রবার রাতে এমন ঘটনায় আতঙ্কিত পড়ুয়ারা। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্লস হস্টেলের এই দুরবস্থা বলেই অভিযোগ ছাত্রীদের। অভিযোগ, হেদুয়ার এই গার্লস হোস্টেলে দীর্ঘদিন ধরে কোনও সংস্কারের কাজ হয়নি। এমন ঘটনার পরই শুক্রবার রাতেই তড়িঘড়ি ৭৫ জন ছাত্রীকে সরিয়ে ফাঁকা করে দেওয়া হয় হোস্টেলটি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আপৎকালীন ভিত্তিতে ছাত্রীদের থাকার জন্য অন্যান্য হোস্টেল ও গেস্ট হাউসে জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে।
সূত্রে খবর, তিনতলার এই হস্টেলের গ্রাউন্ড ফ্লোরের ১৭ নম্বর ঘর থেকে কিছু ভেঙে পড়ার আওয়াজ মেলে। তা শুনেই ছুটে আসেন অন্যান্য আবাসিকরা। নজরে আসে রং ঠিকঠাক থাকলেও ভেঙে পড়েছে বিম। এর থেকে স্পষ্ট নজরদারির অভাবে পুরনো এই বহুতলের ১৭ নম্বর ঘরের সিলিংয়ের বিম ক্ষয়ে যেতে শুরু করে। এরপর শুক্রবার রাতে তা একেবারে ভেঙে পড়ে। এদিকে এই ঘরেই থাকেন দুই আবাসিক।
হস্টেলের এই ঘটনার পরে ইঞ্জিনিয়াররা আসেন। তাঁরা গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। ঘরগুলি খালি করে দেওয়া হয়েছে। আপাতত ছাত্রীদের অন্য়ত্র স্থানান্তর করা হচ্ছে। এরপর মেরামতির প্রয়োজনীয় কাজ করা হবে।
এদিকে আবাসিক ছাত্রীদের অভিযোগ, এখনও স্থানান্তরিত করার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি কর্তৃপক্ষের তরফে। তাঁরা কোথায়, কীভাবে থাকবেন, তা স্পষ্ট নয় তাঁদের কাছে। গার্লস হোস্টেলের ভিতরে এভাবে চাঙড় ও বিম ভেঙে পড়ার ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত তাঁরা। একইসঙ্গে তাঁরা মনে করছেন বড়সড় বিপদ ঘটে যাওয়াটাও আশ্চর্যের কিছু ছিল না। সঙ্গে এও জানা গেছে,ঘটনার আকস্মিকতায় কেউ কেউ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। আবাসিক এক ছাত্রী জানান,যেখানে এই বিম ভেঙে পড়ছে সেখানেই ঘুমাচ্ছিলেন তিনি। কোনও রকমে বেঁচে গিয়েছেন।।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, হস্টেলের বেহাল অবস্থার কথা আগেই জানা ছিল। তবে নানা কারণে সংস্কারের কাজ দীর্ঘদিন আটকে ছিল। কিন্তু এবার আর দেরি নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, পূর্ত দফতর ইতিমধ্যেই বিষয়টি জানানো হয়েছে। দ্রুত ভবন পরিদর্শন করে নতুন করে নির্মাণ বা সংস্কারের কাজ শুরু হবে।