পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এবার কলকাতা ও আশপাশের অঞ্চলে দমকল যাওয়ার জন্য তৈরি হতে চলেছে বিশেষ ‘গ্রিন করিডর’। সম্প্রতি একাধিক বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান রাজ্যের অগ্নিনির্বাপন ও আপৎকালীন পরিষেবা দফতরের মন্ত্রী সুজিত বসু। সঙ্গে এও জানা যাচ্ছে, কলকাতা পুলিশের সঙ্গে এ ব্যাপারে একটি বৈঠকও হয় দমকল মন্ত্রীর। সেখানেই মন্ত্রী জানান,’কলকাতা, হাওড়া, ব্যারাকপুর, বিধাননগর কমিশনারেট ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে দমকলের গাড়ি যাতে দ্রুত পৌঁছাতে পারে, তার জন্য গ্রিন করিডর চালু করা হবে। পাশাপশি প্রতিটি গাড়িতে সংযোজন হতে চলেছে জিপিএস ট্র্যাকার এবং থাকবে একটি আধুনিক কন্ট্রোল রুম, যা রিয়েল-টাইমে ফায়ার টেন্ডারগুলির দিকে নজর রাখবে।’
দমকল মন্ত্রী এই বৈঠকে জানান, এই গ্রিন করিডর তৈরি করার মূল কারণ, অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পর জরুরি পরিস্থিতিতে রাস্তায় দমকল গাড়ির চলাচলে যাতে কোনও বাধা না হয় সেই কারণে। এর পাশপাশি পুলিশ আগুনের খবর পেলেই দ্রুত ট্রাফিকও ক্লিয়ার করবে। একইসঙ্গে শুরু হচ্ছে জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের ব্য়বস্থাও। যেখানে প্রতিটি দমকল গাড়িতে বসানো হবে জিপিএস ডিভাইস। কোন গাড়ি কোথায় রয়েছে, কোন পথে যাচ্ছে – সব তথ্য থাকবে কন্ট্রোল রুমের কাছে। এছাড়াও দমকল ও পুলিশের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য গড়ে তোলা হবে একটি অভিন্ন কন্ট্রোল রুম। এসওএস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নির্দেশ যাবে সংশ্লিষ্ট বিভাগে। শুধু তাই নয়, তৈরি করা হবে ২৫টি নতুন ফায়ার স্টেশনও।
সম্প্রতি কলকাতার খিদিরপুর বাজারে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক দোকান পুড়ে যায় এবং মেছুয়ার হোটেলে আগুনে মৃত্যু হয় ১৪ জনের। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতেই এবার সরকারের নজর দ্রুত সাড়া ও প্রযুক্তিনির্ভর সমন্বয় ব্যবস্থার দিকে। এই উদ্যোগ নাগরিক নিরাপত্তায় এক নতুন দিশা দেখাবে বলেই আশাবাদী প্রশাসন। প্রসঙ্গত খিদিরপুর এবং মেছুয়ার ঘটনায় দমকলের দেরিতে পৌঁছানোর অভিযোগ ওঠে। পৌঁছেও সমন্বয়ের সঠিক অভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও অনেকটা বৃদ্ধি পায়। সেই ঘটনাগুলি থেকেই শিক্ষা নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে যাতে তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই কারণেই এই উদ্যোগ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।