সামাজিক প্রভাবশালী এবং বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ওয়াজাহাত খানকে ফের গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। শনিবারের এই গ্রেফতারিতে গার্ডেনরিচ থানার দায়ের করা পৃথক একটি মামলার উল্লেখ রয়েছে। এদিকে গল্ফ গ্রিন থানার মামলায় ১৩ দিনের পুলিশ হেফাজতে থাকার পর শনিবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে, তাঁকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়। কিন্তু আদালতে গার্ডেনরিচ থানার পুলিশ হাজির হয়ে ফের তদন্তের স্বার্থে তাঁকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায়। তা মঞ্জুরও করে আদালত।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শাসক বিরোধী শিবির বিজেপির তরফ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, কলকাতা পুলিশের এই পদক্ষেপ তদন্তের স্বার্থে, না কোনও সুপরিকল্পিত কৌশলের অংশ?
প্রসঙ্গত, বিজেপি নেতা সুরজ সিং প্রথম ওয়াজাহাত খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তাঁর সরাসরি অভিযোগ ছিল, কলকাতা পুলিশ কি তাঁকে ইচ্ছাকৃতভাবে অন্য রাজ্যের পুলিশ থেকে দূরে রাখছে কি না তা নিয়েই। সঙ্গে এ প্রশ্নও তোলেন, বারবার নতুন মামলা করে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে রাখার পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে কি না।
এদিকে কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, ওয়াজাহাদ খানের বিরুদ্ধে আসাম এবং হরিয়ানায় পৃথক মামলাও দায়ের হয়েছে। দুই রাজ্যের পুলিশই ইতিমধ্যে একাধিকবার তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছে। এমনকি তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে, কিন্তু তাঁকে পলাতক অবস্থায় পাওয়া যায়। এখন কলকাতা পুলিশের তরফে পরপর পৃথক মামলা দায়ের করে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠল এটা আসলে অসম ও হরিয়ানা পুলিশের তদন্তে বাধা দেওয়ার জন্য কি না তা নিয়েই।
এই সমস্ত অভিযোগের উত্তরে কলকাতা পুলিশ মুখ খুলতে চায়নি। তবে একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা শুধু জানান, ‘আমরা তদন্তের স্বার্থেই ওঁকে হেফাজতে নিয়েছি। গার্ডেনরিচ থানায় জমা পড়া একটি নতুন অভিযোগের ভিত্তিতেই পৃথক মামলা রুজু হয়েছে। অন্য রাজ্যের পুলিশও আইন মেনে আদালতের মাধ্যমে আবেদন জানাচ্ছে। আদালতই শেষ সিদ্ধান্ত নেবে।’
তবে বিজেপির ধারনা, পুলিশ আইন মেনে চলার কথা বললেও এই ঘটনায় রাজনৈতিক প্রভাবও থাকতে পারে। একাধিক মামলায় ওজাহাত খানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ায় কলকাতা পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে। বিজেপির ধারনা, অসম ও হরিয়ানা পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে কলকাতার বিভিন্ন থানায় মামলার জটিলতা তৈরি করে তাঁকে রক্ষা করার চেষ্টা হচ্ছে।