রাজ্য বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপি বিধায়কদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাকর্মীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই এই নির্দেশের বিরুদ্ধে বাদল অধিবেশনের শুরুতেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী–সহ বিজেপি বিধায়কদের কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তারক্ষীদের বিধানসভার ভিতরে ঢোকার অনুমতি চেয়ে মামলার দ্রুত শুনানির আবেদনও করা হয়। পাশাপাশি তিনি এও জানান, তিনি এবং অন্যান্য বিজেপি বিধায়করা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পরে বিরোধী দলনেতার শপথ গ্রহণের দিন এক গোলমালকে কেন্দ্র করে কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিধানসভায় ঢোকা নিষিদ্ধ করে। এদিকে বিজেপি বিধায়করা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পান বলে ওই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন শুভেন্দু অধিকারী ও শঙ্কর ঘোষ।
এই মামলারই শুনানি হয় বৃহস্পতিবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। শুভেন্দুর আইনজীবী জয়দীপ কর জানান, ‘যে রাজ্যের পুলিশ বিধানসভার ভিতরে যেতে পারে, তাদের প্রতিটি প্রান্তে প্রবেশাধিকার থাকে, তাদের ‘স্ট্রেঞ্জার’ বলা হয় না। অথচ কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা কর্মীরা বৃষ্টিতে ভিজে গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন। এটা সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারার লঙ্ঘন।’ এখানেই থেমে থাকেননি শুভেন্দুর আইনজীবী। পাশাপাশি এও বলেন, বিধানসভার রুল ৩৫২ এবং ৩৬০ অধ্যক্ষকে কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিলেও, ‘স্ট্রেঞ্জার’ শব্দটি নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। এরপই বিচারপতি অমৃতা সিনহা স্ট্রেঞ্জার কী এবং সেটার ঠিক সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তা জানতে চান রাজ্যের বিরোধী দলনেতার আইনজীবীর কাছে। উত্তরে জয়দীপ কর জানান, ‘ স্ট্রেঞ্জার শব্দটি প্রসঙ্গে স্পষ্টভাবে বলা হয়নি। তবে রুল ৩৬১–এর প্যারা ৩(ই)-তে এর কিছুটা ব্যাখ্যা আছে। এরই রেশ ধরে জয়দীপ কর যুক্তি দেন, ‘স্পিকারের নির্দেশ অনুসারে, বিধায়কদের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা গেট নম্বর ২–এর সামনে গাড়ি থেকে নামবেন, কেউ অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। অথচ নিরাপত্তা বিষয়টি আর্টিকেল ২১ অনুযায়ী মৌলিক অধিকার। সেক্ষেত্রে একজন বিধায়কের নিজের নিরাপত্তা রক্ষীও ঢুকতে পারবেন না, এটা সংবিধানসম্মত নয়।’ এরপরই অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে জানান, এ ব্যাপারে রাজ্য কিছুটা সময় চায়। তবে বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘এক্ষেত্রে সময় দেওয়া যাবে না।’ এরই জবাবে কিশোর দত্ত জানান, তিনি নিজের জন্য এ সময় চাননি, চেয়েছেন বিরোধী দলনেতার আইনজীবী জযদীপ করের জন্য। এদিকে জয়দীপ কর জানান, তাঁর তরফ থেকে যা বলার ছিল, বলাহয়েগেছে।
আদালত সূত্রে খবর, এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৮ জুলাই।