কসবা গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের ১ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয আলিপুর আদালত। শুক্রবার আলিপুর আদালতে অভিযুক্তদের তোলা হলে সরকারি কৌঁসুলি জানান, প্রাথমিক মেডিক্যাল রিপোর্ট, প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি এবং কলেজ চত্বরে ঘটা ঘটনাগুলি বিশ্লেষণ করে আদালত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত বলেছে, এই ধরনের অভিযোগে দ্রুত ও পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত অত্যন্ত জরুরি। অন্যদিকে, অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবীর দাবি, ‘ঘটনাটিকে অনেকে যেভাবে ব্যাখ্যা করছেন, তা বিভ্রান্তিকর। তদন্ত চলছে। এখনই চূড়ান্ত কিছু বলা যায় না।‘
বুধবার কসবায় সাউথ ক্যালকাটা ল‘কলেজের ভিতরে ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের কাছে ছাত্রী অভিযোগে জানিয়েছে, বুধবার সন্ধেয় কলেজে ঢোকার কিছুক্ষণ পরেই মনোজিত্ তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। ছাত্রী জানিয়ে দেন, তাঁর প্রেমিক আছে এবং তিনি অন্য কাউকে ভালোবাসেন। এরপরই মনোজিতের আচরণ পাল্টে যায়। অভিযোগ, কলেজের প্রধান গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাইরে যাওয়ার রাস্তা আর থাকে না। গার্ডরুমে নিয়ে গিয়ে শুরু হয় মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার। ছাত্রীটি কেঁদে অনুরোধ করেছিলেন। এমনকী গার্ডের পাও ধরেছিলেন। বারবার বলেছিলেন, ‘আমার শরীরটা তোমার নয়, দয়া করে ছেড়ে দাও।‘ কিন্তু কিছুই শোনেনি মনোজিত ও তার দুই সঙ্গী।
ছাত্রী লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁকে জোর করে বিবস্ত্র করা হয়, গার্ডরুমে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। একজন নয়, একাধিক ব্যক্তি ছিল। তারা ভিডিও তোলে, হুমকি দেয় — ‘যদি মুখ খোলো, এই ভিডিও ভাইরাল করে দেব। তোমার প্রেমিককে খুন করে ফেলব। তোমার পরিবারকে জেলে ভরব।‘ ঘটনার পর ছাত্রীটি বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়লেও পরে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন এবং অভিযোগ দায়ের করেন কসবা থানায়।
এদিকে ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই হস্তক্ষেপ করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। কমিশনের চেয়ারপার্সন বিজয়া রাহাতকর কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে চিঠি দিয়ে বলেছেন, ‘এই ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। নির্যাতিতাকে অবিলম্বে আইনি, মানসিক ও চিকিৎসা সহায়তা দিতে হবে। বিএনএসএস–এর ৩৯৬ ধারা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণও দেওয়া উচিত।’ এর পাশাাপাশি তিন দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট চেয়েছে কমিশন।