৪.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বিমান স্ট্রিপ তৈরি করল অসমের জাতীয় মহাসড়কে। ডিব্রুগড়ের একেবারে কাছেই। এর থেকে কাও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, চিনকে এক বিশেষ বার্তা দিতে এবং উত্তর–পূর্বের কৌশলগত প্রস্তুতিকে আরও সংঘবদ্ধ করার জন্য অসমের ডেমো এবং মোরানের মধ্যে জাতীয় সড়ক–২৭–এ বিমানের এই বিমান স্ট্রিপ তৈরি করা হয়েছে। সঙ্গে এও জানা গেছে, এটিজরুরিঅবতরণেসুবিধারজন্যতৈরি।
এদিক সূত্রে এ খবরও মিলছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে, ভারতীয় বিমান বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় বিমান কমান্ড এই রানওয়েতে বিমান অবতরণ করবে। আর এই প্রকল্পটি চিন সীমান্তবর্তী সংবেদনশীল পূর্ব অঞ্চলে ভারতের দ্রুত প্রতিক্রিয়া ক্ষমতা দিতে এ এক জোরদার পদক্ষেপ বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। সঙ্গে এও জানান, জাতীয় মহাসড়ক–২৭–এর এই ৪.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ অংশটি যাত্রীবাহী বিমান এবং সুখোই এবং রাফালে সহ ভারতীয় বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমানের অবতরণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
আর ভারতীয় বিমান বাহিনী বর্তমানে বিমান ঘাঁটি পরিদর্শন করছে এবং সেপ্টেম্বরের মধ্যে যুদ্ধবিমান তাদের পরীক্ষামূলক অবতরণ শুরু করবে বলেও জানান তিনি। আর সবকিছু ঠিক ভাবে চললে অক্টোবরের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে কার্যকর হবে এই ৪.৫ কিলোমিটার বিমান স্ট্রিপটি বলে আশা করা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সাংবাদিকদের এও জানান, ‘জাতীয় মহাসড়কের মাঝখানে, আমরা ডেমো–মোরান অংশে একটি গুরুত্বপূর্ণ জরুরি অবতরণ সুবিধা তৈরি করছি। বেসামরিক বিমান চলাচল হোক বা ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিমান যদি কোনও কারণে বিমান ডিব্রুগড় বিমানবন্দরে অবতরণ করতে না পারে, তাই এই রানওয়ে বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।‘
প্রসঙ্গত, বিমানের এই জরুরি অবতরণ সুবিধাটি জাতীয় মহাসড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়ন কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) দ্বারা নির্মিত হয়েছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে উন্নত যুদ্ধবিমান অবতরণ এবং বিমান প্রদর্শনীর জন্য বিমানঘাঁটিটি যাতে ব্যবহার করা যায় তা নিশ্চিত করার জন্য ভারতীয় বিমান বাহিনীর সাথেও আলোচনা চলছে। অসমের মুখ্যয়মন্ত্রী সঙ্গে এও জানাতে ভোলেননি যে, ‘উত্তর–পূর্বে এটিই প্রথম এই ধরণের অবতরণ সুবিধা। তবে ভারত সরকার ইতিমধ্যে আরও দুটি অনুমোদন দিয়েছে। যার মধ্যে একটি নিম্ন আসামের বোরোমা–তিহুতে এবং অন্যটি নগাঁও এবং লামডিংয়ের মধ্যে শঙ্করদেবনগরে। আমরা প্রথমে এটি উদ্বোধন করব এবং তারপরে বাকিগুলির কাজ শুরু করব।’
এরই রেশ ধরে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা মহাসড়কের ধারে নিয়মিত বিরতিতে হেলিপ্যাড তৈরির পরিকল্পনার কথাও বলেন। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি জানান, ‘আমরা মহাসড়কের পাশে উঁচু এলাকায় নতুন হেলিপ্যাড তৈরির চেষ্টা করছি। বন্যার সময়, যখন হেলিকপ্টার অবতরণের কোনও নিরাপদ জায়গা থাকে না, তাই এই হেলিপ্যাডগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিকল্পনা হল প্রতি ৫০ থেকে ১০০ কিলোমিটার অন্তর একটি হেলিপ্যাড তৈরি করা। নুমালিগড় থেকে ডিব্রুগড়–তিনসুকিয়া পর্যন্ত, আমাদের লক্ষ্য হল পুরো রুটটিকে একটি আধুনিক করিডোরে পরিণত করা। এই সুবিধাটি আসামের দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। বিশেষ করে বন্যার সময় যখন প্রচলিত রানওয়েতে প্রবেশাধিকার সম্ভব হয় না। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন যে এই পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়নের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, এনএইচআইডিসিএল এবং কেন্দ্রের সাথে সমন্বয় করা হচ্ছে।’