সপ্তাহের শুরুতেই দুর্যোগ রাজ্যজুড়ে। সোমবার সকাল থেকে কলকাতা সহ আশপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মুষলধারে বৃষ্টি নামায় বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ, অফিসযাত্রী থেকে পড়ুয়া। সকালের রাস্তায় বাস, ট্রেন এবং অন্যান্য পরিবহণ ব্যবস্থায় চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন সবাই। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, পার্ক সার্কাস, বেহালা, বাগুইআটি, লেকটাউন–সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় জল জমে যান চলাচল ব্যাহত হয়। পুরসভা ও বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ জল জমা এলাকায় পাম্প বসিয়ে জল সরানোর কাজও শুরু করে। কলকাতা, হাওড়া ও বর্ধমানের বেশ কিছু স্কুলে হাজিরা কম এদিন।
এদিকে, আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এখনই বৃষ্টির থেকে রেহাই মিলছে না। বঙ্গোপসাগরে নতুন করে নিম্নচাপ তৈরি হওয়ায় আগামী কয়েক দিন ধরেই বৃষ্টির দাপট বজায় থাকবে দক্ষিণবঙ্গে।সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, উত্তর–পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে শক্তি বাড়াচ্ছে নিম্নচাপ। উপকূল গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর অবস্থান করছে। পশ্চিম ও উত্তর–পশ্চিম দিকে এগোবে। খুব ধীরগতিতে আগামী দু‘দিনে এটি উত্তর ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে যাবে। বাংলাদেশ উপকূলে নিম্নচাপের অবস্থান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫.৮ কিলোমিটার উপরে। আগামী দুই দিনের মধ্যে এই সিস্টেম ধীরে ধীরে উত্তর ওড়িশা, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। এর পাশাাপাশি মৌসুমি বায়ুর সক্রিয় প্রবাহও রাজ্যে বজায় রয়েছে, যা উত্তর–পশ্চিম বঙ্গোপসাগর হয়ে দক্ষিণ–পূর্ব উত্তরপ্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। এর প্রভাবে, দক্ষিণবঙ্গে দেখা যাবে মূলত মেঘলা আকাশ। আগামী সাতদিন বৃষ্টির সম্ভাবনা। সোম ও মঙ্গলবার দিনভর বজ্রবিদ্যুৎ–সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস। ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার হালকা ঝোড়ো হাওয়া হতে পারে। উপকূল ও পশ্চিমের জেলায় বৃষ্টি বেশি হবে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। বৃষ্টি বেশি হওয়ার আশঙ্কা দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব বর্ধমান, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলাতে। তবে বুধ ও বৃহস্পতিবার বৃষ্টির প্রভাব কমবে।
এদিকে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী সোমবার সকাল থেকেই কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায় হয় বজ্রবিদ্যুৎ–সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি। সঙ্গে কোথাও কোথাও বয়ে যায় ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়াও। কলকাতায় সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে ০.৩ সেলসিয়াস কম। গতকাল, রবিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে ২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৭৯ থেকে ৯৭ শতাংশ। আগামী ২৪ ঘণ্টায় শহরের তাপমাত্রা থাকবে ২৬ ডিগ্রি থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১২.৩ মিলিমিটার।এরসঙ্গে মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম বর্ধমান এবং পুরুলিয়ায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে।