‘কাকু’ আর ‘জ্যেঠু’-দের দাপটে চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে বহুদিন ধরে সংবাদ শিরোনামে ‘কালীঘাটের কাকু’। এবার বঙ্গ রাজনীতিতে তুমুল আলোড়ন তোলা কসবা গণধর্ষণের ঘটনায় সামনে এলেন এক জ্যেঠু। কসবা কলেজের নিরাপত্তারক্ষী থেকে শুরু করে অনেকের মুখেই শোনা গেছে এই ‘জ্যেঠু’-র কথা। কিন্তু এই জ্যেঠু কে তা নিয়ে ছিল একটা ধোঁয়াশা। এদিকে কসবা তদন্তের ঘটনায় নেমে সামনে এসেছে নানা তথ্য। যার মধ্যে মিলেছে এক ভিডিয়োও। আর এই ভিডিওতেই দেখা যাচ্ছে একটি অনুষ্ঠানে বিধায়ক অশোক দেবকে ‘জ্যেঠু’ বলে সম্বোধন করছেন মূল অভিযুক্ত মনোজিত্ মিশ্র। কসবার আইন কলেজে একটি অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানেই বিধায়ক অশোক দেবকে জ্যেঠু বলে সম্বোধন করেন মূল অভিযুক্ত। শুধু তাই নয়, বিধায়ক তাঁর হাতও ধরে রেখেছিলেন। এর থেকে স্পষ্ট কসবা ল কলেজে যে জ্যেঠুর কথা বারবার সামনে আসছে তিনি অন্য কেউ নন, তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা তথা বিধায়ক অশোক দেব।
যদিও এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর বিধায়ক অশোক দেব জানান, ‘ওকে চিনতাম। এর থেকে বেশি কিছু নয়। অনেকেই তো আমার কাছে যায়। চেনা দুরকমের হয়। একটা হল এমনি চিনি, অপরটা হল খুব ভালভাবে চিনি। ওকে আমি এমনিই চিনতাম, কলেজে পড়ত, সেই সুবাদেই।’ আর মনোজিতের চাকরি পাওয়ার ব্যাপারে অশোক দেব বলেন, ‘আমাদের একটা ছেলের প্রয়োজন ছিল। ও কলেজে পড়ত। কোনও স্থায়ী চাকরি নয়। এবার চাকরি খতম। কলেজে থেকেও বহিষ্কার।’
সূত্রের খবর, আদালতে পুলিশও জানিয়েছে, মূল অভিযুক্ত বেশ প্রভাবশালী। সেখানে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘ওকে আমরা কেউ চিনিই না। হয়তো মিছিলে হাঁটছে, পাশে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। আমার মনে হয় না, চন্দ্রিমার সঙ্গে ওর কোনও পরিচয় ছিল। আমার বিশ্বাস হয় না, অশোক দেব এটাকে প্রশ্রয় দেবেন।’
তবে তৃণমূল নেতারা এখন যাই বলুন না কেন এই বিষয়টি নিয়ে আগেই অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। কসবার গণধর্ষণের কাণ্ড সামনে আসার পর প্রশ্নও করেছিলেন, ‘তৃণমূলের বিধায়ক অশোক দেববাবু কি জানতেন না? এই অভিযুক্তকে পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকিয়েছেন। এরকম আরও তিনটি ছেলেকে আপনি ঢুকিয়েছেন, আমাদের কাছে তথ্য প্রমাণও রয়েছে।’ ঘটনার পর ভাইস প্রিন্সিপ্যাল যখন অশোকবাবুকে জানিয়েছিলেন, তখন অশোক দেবে বলেন, ‘দু’দিন ছুটি রয়েছে, সোমবার দেখব।’