আরও বিপদে পড়তে চলেছে কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ধর্ষণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র, অন্তত নতুন ডাক্তারি রিপোর্ট জানাচ্ছে এমনটাই। কারণ, তাঁর শরীরে এমন কিছু নিশান পাওয়া গিয়েছে, যার জেরে আদালতে তার সমস্ত দাবি নস্যাৎ হয়ে যেতে পারে।
সূত্রে খবর, ডাক্তারি পরীক্ষায় মনোজিৎ মিশ্রের শরীরের একাধিক জায়গায় নখের আঁচড়ের দাগ মিলেছে৷ এই আঁচড়ের দাগগুলো টাটকা৷ আঁচড়ের দাগের ধরন দেখে মনে করা হচ্ছে, ধর্ষণের সময় বাধা দিতে গেলেই এমন আঁচড়ের দাগ দেখা যায় অভিযুক্তের শরীরে। পুলিশ সূত্রে এও জানা গেছে, মনোজিতের শরীরে কিছু ক্ষত পাওয়া গিয়েছে আঁচড়ের দাগ। এই দাগগুলো টাটকা৷ কোনও মানুষ যখন বাধার সম্মুখীন হয় তখনই তার শরীরে এমন ক্ষত দেখতে পাওয়া যায়। এর আগে নির্যাতিতার মেডিক্যাল পরীক্ষাতেও তার বয়ানের সঙ্গে মিল পাওয়া গিয়েছিল৷ সেই রিপোর্টে, নির্যাতিতার গোপনাঙ্গে ক্ষত, শরীরে কামড়ের দাগ ও আঁচড়ের দাগ মিলেছিল৷এছাড়া, কলেজের সিসিটিভি ফুটেজেও নির্যাতিতা ছাত্রীকে জোর করে কলেজের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার ফুটেজ পেয়েছে পুলিশ।
এদিকে গত ২৫ জুন প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে কলেজেরই গার্ডরুমের ভিতরে আটকে রেখে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে মনোজিতের বিরুদ্ধে৷ নির্যাতিতা তাঁর বয়ানে গোটা ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়েছেন৷ সঙ্গে এও জানিয়েছেন, এই অত্যাচারে মনোজিতকে সাহায্য করেছে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের আরও দুই ছাত্র। পরে পুলিশের হাতে আসে ধর্ষণের সময় তোলা ভিডিও। এই ভিডিও মেলে এক অভিযুক্তের মোবাইল থেকে।এগুলো ব্ল্যাকমেইল করার জন্য তুলে রাখা হয়েছিল বলেই জানা যাচ্ছে।
কসবা কাণ্ডের তদন্ত করছে কলকাতা পুলিশের ৯ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল৷ এর মধ্যেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ তাদের হাতে এসেছে৷ জানা গিয়েছে, ঘটনার পরের দিন সকালে কলেজের নয়না চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করেছিল মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ৷ ফোনে কী কথা হয়েছিল তা নিয়ে ভাইস প্রিন্সিপালকে ২ বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে৷এছাড়া, ঘটনার সময় অপর অভিযুক্ত জাইব যে মেডিসিন শপে ইনহেলার কিনতে গিয়েছিল, তার সিসিটিভি ফুটেজেও পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। ওই ওষুধের দোকানের মালিক জানিয়েছেন, জাইব নগদ এবং ইউপিআই দু’ভাগে ইনহেলারের টাকা দিতে চেয়েছিল। প্রথম দফা জবরদস্তির সময় নির্যাতিতার প্যানিক অ্যাটাক হয় বলে অভিযোগ পত্রে জানিয়েছিলেন নির্যাতিতা। সেই সময় জাইবকে দিয়ে ইনহেলার কিনতে পাঠায় মনোজিৎ৷ পরে ইনহেলার নিয়ে সুস্থ হওয়ার পরেও নির্যাতিতাকে বের হতে দেওয়া হয়নি কলেজ থেকে। বরং তাকে জোর করে কলেজে ঢুকিয়ে গার্ডরুমে নিয়ে গিয়ে চলে অত্যাচার৷ যদিও আদালতে মনোজিতের আইনজীবী দাবি করেছেন, ধর্ষণ নয়, সেদিন যা হয়েছিল উভয়পক্ষের সম্মতিক্রমেই হয়েছিল।