কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে রাজ্যের রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করল বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ।একইসঙ্গে আদালত জানতে চায়, কসবা কাণ্ডে তদন্তের অগ্রগতি কী হয়েছে সে বাপারে। এরই সূত্র ধরে তদন্তকারীদের কাছে কেস ডায়েরি তলব করা হয়েছে। এর পর রাজ্যের পদক্ষেপ নিয়ে রিপোর্ট দিতে হবে আদালতকে। এরপরই বিচারপতি সৌমেন সেন বলেন, ‘তদন্ত কত এগোল, সেটা আমরা দেখতে চাই। আমরা তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কনসার্ন।’ একইসঙ্গে বিচারপতি এও জানান, এই তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে রিপোর্ট সিলড কভারে দিতে হবে।
এদিকে এদিনের শুনানিতে মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ঘটনার তিন ঘণ্টার মধ্যেই মহিলা পুলিশ আধিকারিক একজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। সেখানে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। এরপরই কলেজের (আইন) সংবিধান সম্পর্কে রাজ্যের কাছে জানতে চায় হাইকোর্ট।
গত ২৫ জুন কসবার ল কলেজের মধ্যে আইনের ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পরই তদন্তে নেমে প্রধান অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র–সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কসবাকাণ্ড নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে একাধিক জনস্বার্থ মামলা। এদিকে, কসবাকাণ্ডে তিনটে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। অথচ সেই মামলাগুলোতে যুক্তই করা হয়নি নির্যাতিতাকে। অথচ মামলা দায়ের হয়েছে তাঁকে নিয়েই। সিবিআই তদন্ত এবং ক্ষতিপূরণও চাওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে মামলাকারীর আইনজীবী সৌমশুভ্র রায়ের বক্তব্য, এখানে তাঁর নির্যাতিতার বিরুদ্ধে কোনও বক্তব্য নেই। সেই কারণে এই মামলায় তাঁকে যুক্ত করার প্রয়োজন নেই।অন্যদিকে নির্যাতিতার পরিবার শুরু থেকেই পুলিশি তদন্তে আস্থা রেখছেন। তাঁরা চান, কলকাতা পুলিশ যেভাবে তদন্ত করছে সেভাবেই যেন তদন্ত চালিয়ে যাক। এর পাশাপাশি কসবা কাণ্ডে দায়ের হওয়া তিনটি জনস্বার্থ মামলায় তাঁরা যুক্ত হওয়ার আবেদনও জানিয়েছেন। পরিবারের পক্ষের আইনজীবীরা জানান, পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট যে গতিতে ও গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে, তা যেন বাধাপ্রাপ্ত না হয়। তাই এখনই সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন নেই।
এদিন মামলার শুনানিতে আদালতের তরফে পরিষ্কার করে জানানো হয়, নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের কোনও ছবি বা ভিডিও সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।
কসবাকাণ্ডের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয় সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ। এনিয়েও হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। এদিন মামলার শুনানিতে আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, কলেজের পঠনপাঠন কোনভাবেই যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেই দিকটি সুনিশ্চিত করতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করতে হবে।
আগামী ১০ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।