হাইকোর্টের নির্দেশে এবার স্বস্তিতে শান্তনু সেন। তাঁর ডাক্তারি করার ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা রইল না। দু বছরের জন্য তাঁর যে রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছিল সেই নির্দেশ বাতিল করল হাইকোর্ট। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলের তরফে শান্তনুর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয় গত সপ্তাহে। কাউন্সিলের বক্তব্য ছিল, শান্তনু এমন একটি বিদেশি ডিগ্রি ব্যবহার করছেন যা অবৈধ। ভারতে সেই ডিগ্রির রেজিস্ট্রেশন করানো হয়নি বলেও দাবি করা হয় কাউন্সিলের তরফে। এদিকে, শান্তনুর বক্তব্য ছিল, তিনি রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু কোনও সাড়া পাননি।
পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের এই সিদ্ধান্তের পরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন চিকিৎসক–নেতা শান্তনু। সোমবার ছিল সেই মামলার শুনানি।সোমবার কাউন্সিলের সেই নির্দেশ খারিজ করে দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। বিচারপতি বলেন, ‘কী কারণে তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিল হচ্ছে, সেটা জানানো প্রয়োজন ছিল।’ এটি একটি ‘নন স্পিকিং’ ‘ক্রিপটিক’ অর্ডার বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি। আদালতের নির্দেশ, মেডিক্যাল কাউন্সিল এই বিষয়ে তদন্তের যাবতীয় রিপোর্ট শান্তনু সেনকে পাঠাবেন এবং তাঁর বক্তব্য শুনবেন।
শান্তনুর আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য এদিন আদালতে উল্লেখ করেন, ২০ বছর ধরে শান্তনু প্র্যাকটিস করছেন। আইএমএ নির্বাচনে সফল হয়েছিলেন। হঠাৎ করে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল একটি স্বতঃস্ফূর্ত পদক্ষেপ করে। একইসঙ্গে শান্তনুর আইনজীবীও বলেন, অভিযোগ আনার পর হঠাৎ করে আইএমএ প্রেসিডেন্ট মিডিয়া কনফারেন্স করে জানিয়ে দেন যে দু বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হবে শান্তনুকে।
এই প্রসঙ্গে শান্তনু সেনের বক্তব্য, তাঁকে কোনও ফোন করা হয়নি। মামলা দায়ের হওয়ার পরও কোনও মেল বা ফোন ইত্যাদির মাধ্যমে জানানো হয়নি ঠিক কী কারণে এমন সিদ্ধান্ত। এরপর রাজ্যের তরফে এজি কিশোর দত্ত বলন, ‘ডিপ্লোমা ফেলোশিপ গ্লাসগো, এটা একটা সম্মানীয় ডিগ্রি। এটা সাধারণ মানুষ কী বুঝবেন? ডিপ্লোমা কোনও ডিগ্রি নয়, সেটা কীভাবে বোঝা যাবে?’
উত্তরে বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানান, ‘রেজিস্ট্রেশন হয়েছে বা হয়নি, সেটা আদালত জানতে চায় না। কিন্তু কেন তাঁকে বলা হয়নি সেটা গুরুত্বপূর্ণ। মামলাকারী ছ বছর ধরে এই ডিপ্লোমা ব্যবহার করছেন, এখন কেন পদক্ষেপ করা হল?’ বিচারপতি আরও বলেন, ‘কতজন রোগী চিকিৎসকের ডিগ্রি আর ডিপ্লোমা বোঝেন, আমি জানি না।’