২২ জুলাই পর্যন্ত কসবা কাণ্ডে অভিযুক্তদের জেল হেফাজতের নির্দেশ

কসবা ল কলেজ গণধর্ষণকাণ্ডে মনোজিৎ মিশ্রসহ তিন অভিযুক্তকে ২২ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। অর্থাৎ, আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত জেলেই রাত কাটবে মনজিতদের। গত ১ জুলাই মনোজিৎসহ তিন মূল অভিযুক্তকে ৮ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নিরাপত্তারক্ষী ৪ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে ছিলেন। গত শুক্রবার রক্ষীর সেই মেয়াদ বাড়িয়ে ৮ তারিখ পর্যন্ত করা হয়। এরপর মঙ্গলবার চারজনকেই আদালতে পেশ করা হয়। তাঁদের ২২ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।

সূত্রে খবর কসবা গণধর্ষণকাণ্ডের চারজন অভিযুক্তকে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে পেশ করে পুলিশ ৷ তাঁদের আবারও হেফাজতে নিতে চান তদন্তকারীরা ৷ সেই আবেদন করা হয় আদালতে ৷ পাশাপাশি আদালতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণও পেশ করা হয় কলকাতা পুলিশের তরফে ৷

বায়োলজিক্যাল এভিডেন্স, মনোজিৎ মিশ্রদের সিজ় করা মোবাইল ফোন পাঠানো হয়েছে ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাব বা ফরেন্সিক ল্যাবেএ। সেই রিপোর্টের অপেক্ষায় লালবাজার। এদিন আদালতে সরকারি আইনজীবী শুভাশিস ভট্টাচার্য জানান, ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের ফোন সিজ করা হয়েছে।ঘটনাস্থলে অভিযুক্তদের নিয়ে গিয়ে পুনর্নির্মাণও করা হয়েছে।সংগ্রহ করা হয়েছে বায়োলজিক্যাল এভিডেন্সও।এছাড়াও আরও বেশ কিছু জিনিস হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা।সবই ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।সম্পূর্ণ রিপোর্ট না আসার কারণে এখনই ধৃতদের হেফাজতে চাওয়া হচ্ছে না।

এদিকে এদিন দুপুর তিনটের পরে কোর্ট লকআপে আনা হয় মনোজিৎদের। মামলা ওঠে তারও ঘণ্টাখানেক পরে। মনোজিতদের আইনজীবী রাজু গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন তাঁর মক্কেলদের জামিনের আবেদন জানাননি। বরং অন্য অভিযোগ তোলেন। এদিন মনোজিতের আইনজীবী আদালতে অভিযোগ করেন, তাঁদের দুই আইনজীবীর নাম আদালতের তালিকায় নথিভুক্ত। কিন্তু তাঁদের জেরার সময়ে ডাকা হচ্ছে না। তা হলে কী ভাবে বিচার পাবেন তাঁর মক্কেল এ নিয়ে তৈরি হয় প্রশ্নচিহ্ন। পাল্টা সরকারি আইনজীবী বলেন, এমন কোথাও লেখা নেই যে, অভিযুক্তদের জেরা করার সময়ে আইনজীবীদের সামনে থাকতে হবে। তবে এ দিন জামিন চান নিরাপত্তা রক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্যর দাবি, তাঁর মক্কেলভিক্টিম অফ দ্য সারকামস্ট্যান্সেসঅর্থাৎ পরিস্থিতির শিকার আদালতে তিনি এও বলেন, ‘যদি কোনওরকম কোনও ঘটনা ঘটে থাকে তবে গার্ডকে সাক্ষী হিসেবে ব্যবহার করা হোক। এতে তদন্ত প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা হবে।আইনজীবী জানান, ধৃত পিনাকি ভট্টাচার্যর বাড়িতে তাঁর বয়স্ক বাবামা আছেন। তিনি নিজেও সুগারের রোগী। তাঁর পক্ষে এই ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকা সম্ভব নয়। এদিকে নিরাপত্তা দেওয়ার কাজ যাঁর তিনি কেন চুপ থাকলেন বা কেন অন্যদের চিৎকার করে ডাকলেন না এমন একাধিক প্রশ্ন  উঠে আসছে। যার জবাবে আইনজীবী জানান, ‘এবার দেখতে হবে বাকি অভিযুক্তদের সঙ্গে তাঁর ভূমিকা কী ছিল বা তাঁকে কেউ কোনওভাবে আটকে রেখেছিল কি না এগুলি তদন্তের বিষয়। এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।

পাশাপাশি পিনাকির আইনজীবী এ প্রশ্নও তোলেন, একজন মাইনে করা রক্ষীর কী ক্ষমতা থাকতে পারে তা নিয়েও। একইসঙ্গে তিনি এদিন আদালতে এও বলেন,  যদি রক্ষী গ্রেপ্তার হয়, তা হলে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও তো প্রশ্ন ওঠা উচিত। যে কোনও শর্তে তাঁর মক্কেলের জামিনের আবেদন জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen + 9 =