শেয়ার বাজারে লোভনীয় মুনাফার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফোন। এরপর ৯৩ কোটি টাকার প্রতারণা। এমনই অভিযোগ কলকাতার এক সংস্থা এবং তার কর্ণধারের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী দিল্লির এক দম্পতি। আর এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে মুকুন্দপুর এলাকায় শুক্রবার সকাল সকাল হানা দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
সূত্রে খবর, দিল্লির এক দম্পতি সেবি বা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া অর্থাত্ সেবি–র কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। তাঁদের অভিযোগ, কলকাতার সংস্থা বিআরএইচ ওয়েলথ ক্রিয়েটর –এর তরফে একাধিক ফোন পান সম্প্রতি। সেখানকার কর্মীরা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মোটা অঙ্কের লাভের আশ্বাস দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ার কেনার জন্য প্ররোচনা দেন।
বিআরএইচ ওয়েলথ ক্রিয়েটর –এর মূল কর্ণধার মুরুগেশ দেবসারিয়া। কোম্পানিটি ২০০৪ সালে রেজিস্টার করা হয়। এর অফিস ছিল কলকাতার তপসিয়া এলাকায়। এই চক্রের কাজ ছিল মূলত ফোন নম্বর জোগাড় করে ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের নিশানা করে চলে একটি চক্র। পরে দিল্লির এই দম্পতি বুঝতে পারেন, তাঁরা চক্রটির শিকার। এরপর অভিযোগে দম্পতি জানান, সংস্থাটি তাঁদের কাছ থেকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে তদন্তে উঠে আসে, শুধু তাঁদেরই নয়, এই একইভাবে বাজার থেকে প্রায় ৯৩ কোটি টাকা তুলেছে ওই সংস্থা। এই প্রতারণার পুরো প্রক্রিয়া চলত একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। সেই ব্যাঙ্কে উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন অ্যান্থনি। এই অ্যান্থনি মূলত আর্থিক লেনদেন এবং বিনিয়োগের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতেন।
এরপর এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মুরুগেশ দেবসারিয়াকে গুজরাতের বরোদা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ ও ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই গা–ঢাকা দিয়েছিলেন তিনি। আরেক অভিযুক্ত অ্যান্থনির খোঁজে কলকাতার মুকুন্দপুরের একটি ফ্ল্যাটে এদিন অভিযান চালায় ইডি। সেখান থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ও ডিজিটাল তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। তবে অ্যান্থনিকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা যায়নি। এই প্রতারণার ঘটনায় সেবি এবং ইডি যৌথভাবে তদন্ত চালাচ্ছে। অ্যান্থনিকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলে আশা করছেন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার আধিকারিকরা।