ভাঙড়ের রাজনৈতিক অশান্তির জেরে ঘুম উড়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পরীক্ষার্থীদের

সম্প্রতি নানা সময়ে ‘ভায়োলেন্স’-এর কারণে শিরোনাম হয়েছে ভাঙড়। এদিকে সামনেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক চূড়ান্ত সেমেস্টারের পরীক্ষা। যা শুরু হওয়ার কথা শনিবার। আর এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ভাঙড় মহাবিদ্যালয়ে ইউনিভার্সিটির পরীক্ষার সিট পড়েছে প্রায় ১,২০০ ছাত্রছাত্রীর। আর এখানেই উঠেছে প্রশ্ন। বোমা-গুলি-মৃত্যুর এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা নেওয়া কি আদৌ সম্ভব কিনা বা পরীক্ষার্থীরা তাঁদের সেন্টারে কী ভাবে পৌঁছাবেন তা নিয়েই। সঙ্গে রয়েছে এ প্রশ্নও যে, এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কোনওভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছালেও পরীক্ষা শেষে তাঁরা নিরাপদে বাড়ি ফিরবেনই বা কি করে? আর মাথায় এই চিন্তা নিয়ে কোনও পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে কারও দেওয়া সম্ভব কি না তা নিয়েও উঠেছে বড় প্রশ্ন।

এদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক চূড়ান্ত সেমেস্টারের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা শনিবার। তার দিন কয়েক আগে, এখন ভাঙড়ের যা অবস্থা তাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা সম্পন্ন করার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন কলেজ কর্তৃপক্ষ।  এই বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারস্থ হয় ভাঙড় মহাবিদ্যালয়। পরীক্ষার সিট সরানোর আবেদনও করা হয়। এদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সিট পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্তর বক্তব্য, ‘প্রয়োজনে মিলিটারির সাহায্যে পরীক্ষা নিতে হবে। পাশাপাশি এও জানিয়েছেন, এত পড়ুয়ার পরীক্ষার ব্যবস্থা অন্যত্র করা সম্ভব নয়। কারণ সর্বত্রই তো সিট পড়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলতে অনুরোধ করেছি অধ্যক্ষকে।’

ভাঙড় মহাবিদ্য়ালয়ের তরফ থেকে এও জানা যাচ্ছে, সুষ্ঠু ভাবে, আতঙ্কমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা আয়োজনের জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ  হওয়ার পর আশ্বাস মিললেও আশঙ্কা কাটছে না।

ভাঙড় মহাবিদ্য়ালয়ে পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে ভাঙড়ের রাজনৈতিক অস্থিরতাই শুধু যে বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াচ্ছে তা কিন্তু নয়। এর সঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় সেনবাহিনীর ইস্যুও। কারণ, ভাঙড় কলেজে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ক্যাম্প তৈরি হয়েছিল এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে। যে জন্য বাহিনী একাধিক ক্লাসরুম অধিগ্রহণ করে। সেই কারণে উপাচার্যের কাছে জানানো হয়, ১২০০ ছাত্রছাত্রীর পরীক্ষার ব্যবস্থা করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। এদিকে সূত্রে এ খবর মিলেছে যে এই ব্যাপারে ভাঙড় মহাবিদ্যালয়ের তরফ থেকে এই সমস্যার কথা জানানো হলে উপাচার্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন যাতে পরীক্ষার স্বার্থে সঠিক সময়ে ভাঙড় মহাবিদ্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়া হয়। এই ক্যাম্প সরানো হয়েছে বুধবার।

এদিকে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে চিন্তায় রয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটি সুশীল কর কলেজ এবং জীবনতলা কলেজের প্রিন্সিপালরাও। সঙ্গে এও জানিয়েছেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরেই ভরসা রাখতে হবে।’ এদিকে ভাঙড়-১ এর বিডিও দীপ্যমান মজুমদার অবশ্য জানিয়েছেন তিনি ভাঙড় কলেজের তরফ থেকে চিঠি পেয়েছেন। এরপর তা পাঠানো হয়েছে শান্তিপূর্ণ পরীক্ষার জন্য এসডিও-র কাছেও, যাতে শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা দিতে পারেন এই দুই কলেজের পরীক্ষার্থীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − two =