স্বস্তি রাজ্যের, এসএসসির নতুন নিয়োগ বিধিকে মান্যতা কলকাতা হাইকোর্টের

এসএসসির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মামলায় স্বস্তি রাজ্যের। এসএসসির নতুন নিয়োগ বিধিকে মান্যতা দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্য সরকারের দেওয়া অতিরিক্ত ১০ নম্বরের আর্জি মানল আদালত। মান্যতা দেওয়া হয়েছে বয়স ছাড়ের আবেদনেও। নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যে মামলা হয়, তাতে একটি পার্ট অর্থাৎ এই পরীক্ষায় কেবল যোগ্যরাই বসতে পারবেন, অযোগ্যরা নন, তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। নতুন করে বুধবার শুনানি হয়। এদিন একাধিক ইস্যুর মধ্যে মূলত একটি বিষয়ের ওপর ফোকাস করা হয়েছিল। চাকরির অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কেন ১০ নম্বর আলাদা দেওয়া এবং নতুন নিয়োগ বিধিতে শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রেও একাধিক যে বদল আনা হয়েছিল, সেই বিষয়ও এদিনের শুনানিতে উত্থাপিত হয়। রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত। এসএসসির তরফে ছিলেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী হিসাবে ছিলেন অনিন্দ্য মিত্র এবং বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।

তবে এদিন স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তির বিরোধিতায় করা সব আবেদন খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, ২০২৫ সালের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া চলবে। এসএসসির বিজ্ঞপ্তিতে তারা কোনও হস্তক্ষেপ করবে না জানিয়েছে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ।

প্রসঙ্গত,নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তির ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানা হয়নি, এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন চাকরি প্রার্থীদের একাংশ। তাঁদের দাবি ছিল, আগের অর্থাৎ ২০২৬ সালের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ীই নিয়োগ প্রক্রিয়া হওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়া ঠিক নয়। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, কোন বিধি অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে সেটা চাকরিপ্রার্থীরা ঠিক করতে পারে না। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কোথাও বলা নেই যে ২০১৬ সালের বিধি অনুযায়ী নিয়োগ করতে হবে। তাই কমিশন যদি ২০২৫ সালের বিধিকে উপযুক্ত বলে মনে করে তাহলেও কোন চাকরিপ্রার্থী প্রশ্ন তুলতে পারেন না। কোনও নিয়োগপ্রক্রিয়ায় প্রার্থীদের যোগ্যতামান কী হবে, তা নির্ধারণ করে নিয়োগকারী। এক্ষেত্রে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে এসএসসি। যে কোনও চাকরিতে অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও তাই শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।মামলার শুনানিতে এসএসসির তরফে ছিলেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন অনিন্দ্য মিত্র ও বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাস।

এরপর বুধবার দুপুর ২টো নাগাদ মামলার রায় ঘোষণা শুরু হয় বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চে। তাতে এসএসসির বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ বিধিকে চ্যালেঞ্জ করে জমা পড়া সব আবেদন খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। অর্থাৎ ২০২৫ সালের বিধি অনুযায়ীই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলবে। যদিও এই নিয়োগ প্রত্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না দাগি অযোগ্যরা। কোনও দাগি অযোগ্য যদি নতুন করে আবেদন করেন, তাহলে তাঁর আবেদন বাতিল হয়ে যাবে। এ বিষয়ে বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রাখে আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × four =