বাঙালি অস্মিতাতেই শান ২১-এর মঞ্চ থেকে

সামনেই ২০২৬-এর নির্বাচন। তার আগে এটাই শেষ একুশে জুলাই। আর এই একুশের মঞ্চ থেকেই তৃণমূল সুপ্রিমো ছাব্বিশের রণনীতি ঘোষণা করবেন এটাই দস্তুর। এর মাঝে বিজেপি শাসিত বেশ কযেকটি রাজ্যে বাঙালি হেনস্থার ছবি সামনে এসেছে। আর এই ইস্যুতে একুশের এই শহিদ দিবসের আগে ১৬ জুলাই পথে নামতে দেখা যায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতাকে। সেদিন তাঁর পাশে দেখা গেছে অভিষেককেও। সেদিনের ব়্যালির পর বাঙালি অস্মিতায় শান দিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে দেখা গেছে মমতা-অভিষেককে। এই একই ঘটনার প্রতিফলন দেখা যাবে ২১এর শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকেও এমনটাই ধারনা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

খুব সত্যি বলতে তৃণমূলের কাছে এই শহিদ দিবসের মঞ্চ বরাবরই রাজনৈতিক শপথ গ্রহণের মঞ্চ। এই মঞ্চই সিঙ্গুরনন্দীগ্রাম পর্বে একসময় পরিবর্তনের আন্দোলনের অন্যতম ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। এরপর ২০১১ সালে পালা বদলের পর এই মঞ্চই হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিজয় উৎসবের মঞ্চ। এই মঞ্চ থেকেই আত্মপ্রকাশ করতে দেখা গেছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তৃণমূলের নতুন গণসংগঠন তৃণমূল যুবর সভাপতি হিসেবে নাম ঘোষণা হয়েছিল অভিষেকের। আবার এই মঞ্চ থেকেইদিল্লি চলো’র ডাক দিয়েছিলেন মমতা। সেখানে বার্তা ছিল দিল্লিতে অবিজেপি কংগ্রেসী সরকার গড়ার। এমনকী ঝড় উঠেছিল একুশের বিধানসভাতেও। ওই বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই একুশে জুলাই মঞ্চ থেকেই বিজেপিকেবহিরাগত’ তকমা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আর এই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকেই সুর বাঁধা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হওয়ার।  এরপর কখনওএকশো দিন’, কখনওআবাস’ ইস্যুতে সোচ্চার হতে দেখা গেছে তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে দলের সাংসদ বিধায়কদেরও। তার আঁচ পৌঁছেছে দিল্লিতেও। এরপর চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে আবার দিল্লিতে অবিজেপি সরকার গঠনের ডাক দিয়েছিলেন মমতা।এই সময়েই রাজ্যে যে অবিজেপি দল শক্তিশালী সেই দলকে মুখ করে বিজেপির বিরুদ্ধে ওয়ান ইজ-টু ওয়ান জোট গড়ার প্রস্তাবও দেন মমতা।তৈরি হয় ইন্ডি জোট।

তবে ২০২৬-এ একেবারে নয়া এক ইস্যুতে শান দিতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলকে। তা হল বাঙালি অস্মিতা। পাশাপাশি পহেলগাঁও ইস্যুতে কেন্দ্রের ব্যর্থতা নিয়েও ইতিমধ্যে সুর চড়িয়েছেন অভিষেক। সব মিলিয়ে বাঙালির উপর নির্যাতন, বাংলাকে বঞ্চনা, প্রাপ্য না মেটানো এবং বাংলা ভাষাকে অমর্যাদা করার মতো ইস্যুগুলোই এবারের একুশে জুলাই মঞ্চে প্রতিধ্বনিত হতে পারে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। তবে ইতিমধ্যেই আবার বাংলা থেকে ঘুরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সাফ বলেছেন বাঙালি আবেগ বিজেপির কাছেই সুরক্ষিত। দুর্গাপুরের মঞ্চে শুরুতেই তাঁর মুখে শোনা গিয়েছিল কালী, দুর্গার নাম। কথা বলেছিলেন বাংলাতেও। বাংলার শিল্প সম্ভাবনার কথা মনে করিয়ে একবার সুযোগ চেয়ে নিয়েছিলেন বাংলার মানুষের কাছে। এর পাশাপাশি আরজি কর থেকে, কসবা কাণ্ড নিয়ে তৃণমূলকে বিদ্ধ করতে ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে এবারের ২১এর এই শহিদ দিবসের মঞ্চ অপেক্ষা করছে মোদির বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − three =