তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবসকে ঘিরে যখন ধর্মতলায় জনপ্লাবন, ঠিক সেই সময়েই অন্যদিকে বকেয়া ডিএ–র দাবিতে আন্দোলনকারী ও বঞ্চিত শিক্ষাপ্রার্থীদের তরফ থেকে পালন করা হল রাজ্যের মেধা ও শ্রমের শহিদ দিবস। উদ্যোগে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ ।
এদিন শহিদ মিনার ময়দানে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অবস্থানস্থলে রাজ্যের মেধা ও শ্রমের শহিদ দিবসে মঞ্চের উপর দুটি প্রতীকী শবদেহ রাখা হয় ৷ যার একটিতে পায়ে লেখা ছিল শ্রম, আর অপরটিতে লেখা ছিল মেধা। তৈরি করা হয়েছিল একটি দুর্নীতির হাঁড়ি কাঠও। মাঝে রাখা হয় একটি শহিদ বেদি ৷ সেখানে দেওয়া হয়েছিল ফুল, মালা ও ধূপ। পাঠ করা হয় মন্ত্র । আহুতি দেওয়া হল বিকাশ ভবন থেকে নবান্নের নাম করে । উৎসর্গ করা হল রাজ্যে সরকার থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে । মঞ্চের নিচে মাটিতে রীতিমতো পুরোহিত সেজে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন করেন আন্দোলনকারীরা। নিঃসন্দেহে এক অভিনব কায়দায় রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।
এই কর্মসূচি সম্পর্কে আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, শ্রমের মূল্য দেশের সব থেকে সস্তা এখন এরাজ্যে । সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির কারণে চাকরি হারিয়ে বেকার হাজার হাজার ছেলে মেয়ে। সরকারের প্রতারণা, দুর্নীতির জেরে চাকরি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লাখ লাখ যুবক-যুবতী। আর এখানেই রাজ্যের মেধা ও শ্রম দু’য়ের মৃত্যু ঘটেছে এই সরকারের হাতে। আর সেই কারণেই এই প্রতীকী কর্মসূচি।
এই কর্মসূচি সম্পর্কে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘রাজ্যের বুকে যদি প্রকৃত শহিদ দিবস পালন করতে হয়, তাহলে বাঙালিকে যে দুটি বিষয় দেশে ও বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করেছিল সেটি হল মেধা ও শ্রম। এই সরকার দায়িত্ব নিয়ে সচেতনভাবে দুর্নীতি করে সেই দুটি শেষ করেছে। বাংলার ছেলে মেয়েদের মেধার কোনও দাম নেই নিজের রাজ্যে। মেধার জোরে চাকরি পাওয়া ছেলেরা দুর্নীতির জেরে কাজ হারাচ্ছেন। চাকরির প্যানেলভুক্ত হওয়া ছেলেরা দুর্নীতির কারণে চাকরি পাচ্ছেন না। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে কোনও নিয়োগ নেই। অর্থাত্, এই রাজ্যের মানুষের শ্রমের মূল্য দেশে সব থেকে সস্তা। তার জন্য দায়ী এই রাজ্য সরকার।’