বিধানসভা ভোটের বাদ্যি বেজে গিয়েছে ২১ জুলাই বা তার আগে ভিন রাজ্যে বাঙালি তথা পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর আক্রমণের ঘটনায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর দলের সেকেন্ড–ইন–কমান্ড তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব়্যালি থেকে।অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দলের হয়ে দুর্গাপুরে সভা করে গেছেন নমোও। ফলে ২০২৬–এর বিধানসভা নির্বাচনে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলতে রাজি যে নয় তা স্পষ্ট। এবার এই রাজনৈতিক লড়াইয়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে আগামী ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের রোড ম্যাপ বানাতে এক বৈঠকের ডাক দিতে দেখা গেল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
তৃণমূল শিবির সূত্রে খবর, আগামী ৮ অগাস্ট বিকেল চারটেয় ভার্চুয়াল বৈঠক ডেকেছেন অভিষেক। বৈঠকে থাকবেন– সংসদ, বিধায়ক কাউন্সিলর, জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, রাজ্যসভার সাংসদরা। আর এই বৈঠকে হাজির থাকতে দেখা যাবে পুরসভার মেয়র, ডেপুটি–মেয়র, চেয়ারপার্সন, ভাইস চেয়ারম্যান।সাংগঠনিক নেতৃত্ব– রাজ্য সভাপতি (মাদার এবং সকল ফ্রন্টাল) রাজ্য কমিটি জেলা সভাপতি– মাদার এবং সকল ফ্রন্টাল জেলা চেয়ারম্যান– মাদার, কলকাতা পুরসভার সব প্রতিনিধি, কলকাতা পুরসভার সব ওয়ার্ডের মাদার প্রেসিডেন্টদের। তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনগুলোর (প্রাথমিক ও মাধ্যমিক) জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যানদেরও এই ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে । দুই মাস আগেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি অনুরূপ ভার্চুয়াল বৈঠক করেছিলেন, যেখানে ভোটার তালিকা নিয়ে বিশেষ নজরদারির নির্দেশ দেন তিনি । এবার সেই প্রেক্ষিতে দলের নিচুস্তরের সংগঠনগুলিকে আরও সক্রিয় করে তোলার বার্তা আসতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল । এদিকে বাংলাভাষীদের উপর ভিন রাজ্যে অত্যাচার, এসআইআর চালু করে বৈধ ভোটারদের নাম কাটার বিজেপির ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে রাজ্য–জুড়ে তৃণমূলের আন্দোলন শুরু হয়েছে। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত ব্লকে ব্লকে এই কাজ চালিয়ে যেতে চায় তৃণমূল। সেই সংক্রান্ত কিছু ঘোষণা থাকতে পারে এই বৈঠকে বলে খবর মিলছে জোড়াফুল শিবির থেকে।
অভিষেকের এই বৈঠক নিয়ে বিশ্লেষকদের একাংশের মত, এবারের বৈঠকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিজেপির বিরুদ্ধে সঠিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর কৌশল নিয়ে দিশা নির্ধারণ হতে পারে । আবার ভোটার তালিকা তৈরি ও সংশোধনের সময় যাতে বিজেপি কোনওভাবে হস্তক্ষেপ করতে না পারে, তার জন্য স্থানীয় নেতৃত্বের ভূমিকা কী হবে, সেই দিকেও জোর দেওয়া হতে পারে।
তৃণমূল নেতৃত্ব যদিও বৈঠকের নির্দিষ্ট আলোচ্যসূচি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেনি ৷ তবে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এটি শুধুই একটি রুটিন বৈঠক নয়, বরং ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের সাংগঠনিক প্রস্তুতির দিক থেকে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জেলা নেতৃত্বের কার্যকারিতা, নিচুস্তরের কর্মীদের সক্রিয়তা এবং সাম্প্রতিক সময়ের জনমুখী কর্মসূচিগুলির বাস্তবায়ন, এই তিনটি দিকেই তীক্ষ্ণ নজর রাখা হবে এই বৈঠকে।