একদিকে চলছিল নবান্ন অভিযান। অন্যদিকে তিলোত্তমা মঞ্চের ডাকে বিকেল চারটেয় শুরু হয় ‘কালীঘাট চলো’ অভিযানও। আর এই অভিযান থেকে স্লোগান ওঠে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে, দাবি ওঠে বিচারেরও। তবে ‘কালীঘাট চলো’ এই অভিযান ঘিরে যাতে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা তৈরি না হয় তার জন্য তৈরি ছিল পুলিশ প্রশাসনও। সূত্রে খবর, এদিনেই ‘কালীঘাট চলো’ এই অভিযানকে সামাল দিতে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে তৈরি করা হয় তিনটি ব্যারিকেড। অন্যদিকে হাজরা থেকে যে রাস্তা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে গিয়েছে সেখানে পুলিশে ছয়লাপ।বর্মপরিহিত অবস্থায় থাকতে দেখা যায় পুলিশআধিকারিকদের। এঁদের সামনে রাখা হয় মহিলা পুলিশকে।পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছিল ব়্যাফ ও জলকামান।
এদিকে বেলা পড়তেই হাজরা মোড়ে ধীরে ধীরে আসতে শুরু করেন নগরিক সমাজের অনেকেই। সঙ্গে শুরু হয় আন্দোলকারীদের স্লোগানিং–সাউটিং। এরই মাঝে হাজরা পার্কে পৌঁছে যেতে দেখা যায় সমাজকর্মী মীরাতুন নাহারকে। শাসকদলকে বিদ্ধ করে তাঁর প্রশ্ন, ‘পুলিশ আর কতদিন দলনেত্রীর সেবা করবেন? আমাদের মেয়ে চলে যাওয়ার পরও ওরা মানুষ হল না? ওঁদের আত্মীয় নেই। এরা সাধারণ মানুষের পুলিশ নয়।’হাজরা মোড় থেকে শুরু হওয়ার আগে পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি ওঠে হাজরার সভা থেকে।প্রশ্নওঠে, সিবিআই কেন অভিযুক্তদের ধরতে পারছে না তা নিয়েও। সঙ্গে এও শোনা যেতে থাকে,’ মোদি–মমতা সবাই এক।’
এদিনের হাজরার এই সভায় উপস্থিত ছিলেন তামান্নার মাও। তিনি বলেন, ‘আমি একটা পল্লিগ্রাম থেকে এসেছি। আমার মেয়েকে ভালো স্কুলে পড়ানোর জন্য আমার স্বামী অনেক চেষ্টা করেছে। উনি একজন পরিযায়ী শ্রমিক। আমার সেই মেয়েকে মমতার গুন্ডারা খুন করেছে। গোটা রাজ্যে ওরা গুন্ডা তৈরি করেছে। তৃণমূলের অফিস থেকে বোমা এসেছিল সিপিআই(এম) এর লোকদের মারার জন্য। আমার মেয়ে দেশের পতাকা চিনত। কেন আমার মেয়েকে মেরে দিল ওরা। আমার বিচার চাই। আমার দুটো হাত আমার মেয়ের রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল ওদের জন্য।’ এর পাশাপাশি তিনি এও বলেন, অভিযুক্তরা এখনো বাইরে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমার মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় ২৪ জন অভিযুক্তই ধরা পড়ছে, ততক্ষণ আমি লড়াই চালিয়ে যাব। আমি যেমন মেয়েকে হারিয়েছি, সেই রকম ভাবেই কোল খালি হয়েছে আরও এক মায়ের। এই লড়াই থামবে না।’