২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের অন্তত ২০০টি স্কুলে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এই সমস্ত বিষয় উল্লেখ করে নবান্নে পাঠানো হল ক্ষয়ক্ষতির তালিকা। কারণ, প্রসঙ্গত, রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য কত স্কুলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার রিপোর্ট চেয়েছিল রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তর। তাতে নজরে আসছে স্কুলের টয়লেট থেকে প্যান চুরির অভিযোগও।
পঞ্চায়েত ভোট মূলত প্রাথমিক স্কুল বা অঙ্গনওয়াড়িগুলোতেই হয়ে থাকে। ভোটের পর স্কুল শিক্ষ দফতর জেলাশাসকদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছে বিদ্যালয়গুলিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত। সেখানে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যাচ্ছে, সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মুর্শিদাবাদে। সেখানে ১৩৫টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত। এর পাশাপাশি উত্তর দিনাজপুরের ২৮টি স্কুলে ভাঙচুর করা হয়েছে, মালদার ২০টি ও কোচবিহারের ১০টি স্কুলে ও হাওড়ার দুটি স্কুলে ভাঙচুর করা হয়েছে। সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে দরজা-জানালা ভাঙচুরের পাশাপাশি ইলেকট্রিক বোর্ড, গ্যাস সিলিন্ডার, মিড-ডে মিলের সরঞ্জাম, এমনকী বাথরুমের প্যান চুরি হয়ে গিয়েছে। নবান্নকে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যাচ্ছে, মোট ৩৬ লক্ষ ৫৭ হাজার ৮১৩ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তবে নবান্নে জমা পড়া এই রিপোর্টে এগিয়ে কোচবিহারের দিনহাটা। নবান্ন সূত্রে খবর যে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন জেলা থেকে তার মধ্যে দেখা যাচ্ছে কোচবিহারের দিনহাটাতেই এতটাই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে যে তার পরিমাণ ৩ লক্ষ ১৫ হাজার টাকারও বেশি। নবান্ন সূত্রে খবর কোচবিহারের দিনহাটার এক নম্বর ব্লকের যে স্কুল গুলির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রত্যেকটি স্কুলই ভোট গ্রহণ কেন্দ্র হিসেবে ছিল গত শনিবার। দিনহাটার এক নম্বর ব্লকের কাটেশ্বর পঞ্চম প্ল্যান প্রাইমারি স্কুল, বড় ভিটা গভর্নমেন্ট প্রাইমারি স্কুল, খালিশা গোস্বামী জুনিয়র বেসিক স্কুল, ভালুকা এপি স্কুল, ইন্দেশ্বর চতুর্থ প্ল্যান প্রাইমারি স্কুল, গোবরা ছাড়া জুনিয়র বেসিক স্কুল, ভাঙ্গিপাট আইএনটি স্কুল, কালমাটি হাই স্কুল, জ্ঞানদাস পশ্চিম পঞ্চম প্ল্যান প্রাইমারি স্কুল,হলদিবাড়ি হাই স্কুল। এর মধ্যে জ্ঞানদাস এবং হলদিবাড়ি হাই স্কুল হলদিবাড়ি ব্লকের মধ্যে পড়লে বাকি প্রত্যেকটি স্কুল দিনহাটা এক ও দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকের মধ্যে।
এর পাশাপাশি গত শনিবার মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির অভিযোগ উঠে এসেছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন। মুর্শিদাবাদের ডোমকল ছিল মনোনয়ন পর্ব থেকেই উত্তপ্ত। সেই ডোমকলের একটি স্কুলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৬০ হাজার টাকারও বেশি। নবান্ন সূত্রে খবর যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে মুশিদাবাদের বেলডাঙ্গা এক ও দু-নম্বর ব্লক, বহরমপুর ভগবানগোলা ১ নম্বর ব্লক, ভরতপুর এক নম্বর ব্লক, ডোমকল ফারাক্কার হরিহরপাড়া, খরগ্রাম এবং লালগোলাতে একাধিক স্কুলে সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। যার মধ্যে খরগ্রামে সবথেকে বেশি স্কুলের সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। অর্থাৎ, রাজনৈতিক হানাহানির জের পড়ল শিক্ষা ব্যবস্থাতেও।