শনিবার বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা ও তাঁর এজেন্ট সুব্রত সামন্ত রায়ের বিরুদ্ধে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, প্রতারণা, জালিয়াতি, তথ্যপ্রমাণ লোপাট সহ ভারতীয় দণ্ড বিধির একাধিক ধারা এবং বিধায়ক হওয়ার কারণে দুর্নীতি দমন আইনে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে।
সূত্রের দাবি, চার্জশিটে জীবনের নানা কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়েছে। যেমন, নিজের জেলা মুর্শিদাবাদ ছাড়াও আরও পাঁচটি জেলার চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে যোগ ছিল জীবনের। এজেন্ট নিযুক্ত করে এই যোগাযোগ রাখা হয়েছিল বলে উল্লেখ রয়েছে এই চার্জশিটে। কোন পদে চাকরি পেতে কত টাকা দিতে হতো, সেই বিষয়টিও জানানো হয়েছে এই চার্জশিটে।
পাশাপাশি জীবনকৃষ্ণের দুটো মোবাইল থেকে উদ্ধার হওয়া তথ্যের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে এই চার্জশিটে। সিবিআই সূত্রে খবর, নিজের মুর্শিদাবাদ জেলা ছাড়াও মালদহ, দুই দিনাজপুর ও নদিয়া জেলার চাকরি প্রার্থীদের নামের তালিকা এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩৮০০ জনের লিস্ট মিলেছে নথি থেকে। এই প্রসঙ্গে সিবিআই সূত্রে দাবি, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির জন্য মাথা পিছু দর ধার্য ছিল ২০-২২ লক্ষ টাকা। নবম ও দশম শ্রেণির জন্য মাথা পিছু নেওয়া হয়েছে ১৫-১৭ লক্ষ টাকা। গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি এর ক্ষেত্রে দর ছিল ১০ ও ৮ লক্ষ টাকা। প্রাথমিক শিক্ষক পদে দর ছিল ১০-১২ লক্ষ টাকা। সিবিআই সূত্রে দাবি, ২০১২ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রিতে জড়িত এই বিধায়ক।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, চাকরি বিক্রির লাভের টাকা থেকে শতাংশের হারে বরাদ্দ ছিল এজেন্ট, সাব এজেন্টদের। মাথা পিছু লাভের ৫ শতাংশ পর্যন্ত দেওয়া হত এজেন্টদের। এই ভাবেই এজেন্ট সাব এজেন্টদের টাকা দিতেন জীবনকৃষ্ণ সাহা, এমন তথ্যও হাতে এসেছে সিবিআই-এর। তাঁদের আরও দাবি, মাস দুয়েক আগে ধৃত কৌশিক ঘোষও এই এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। সূত্রের দাবি,তিনি সিবিআই হেপাজতে থাকাকালীন চাকরি প্রার্থী পিছু ৫ শতাংশ যে কমিশন পেয়েছেন তা জানান সিবিআই আধিকারিকদের।