পঞ্চায়েতে ভোট-সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে আগমী ১৯ জুলাই কলকাতায় মহামিছিলের ডাক দেওয়া হল রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে। এদিকে রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে মোটেই ভাল ফল করেনি বিজেপি। উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহলের শক্ত ঘাঁটিতেও থাবা বসিয়েছে জোড়াফুল। এই পরিস্থিতিতে রবিবার দলের সাংগঠনিক বৈঠকে কার্যত বোমা ফাটালেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রীতিমতো ধমকের সুরে কেন উত্তরবঙ্গ, ঝাড়গ্ৰামে ফলাফল কেন খারাপ হল তা জানতে চান বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। সঙ্গে এও জানান, কর্মীদের মধ্যে লড়াই করার মানসিকাতা কম। তাই একটুতেই বুথ ছেড়ে চলে আসে। কে এদের সাহস দেবে তা নিয়েও রবিবারের বৈঠক থেকে প্রশ্ন তোলেন দিলীপ ঘোষ। ফলাফলের পরিসংখ্যান দিয়ে তাঁকে পালটা জবাব দেওযার চেষ্টা করতে দেখা যায় বর্তমান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে। আর তাতেই পর্যালোচনা বৈঠক পরিণত হয় কার্যত বাকযুদ্ধে। দিলীপ ঘোষ এদিনের বৈকে প্রশ্ন তোলেন, একুশে বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে ঝাড়গ্রাম,জঙ্গলমহল, উত্তরবঙ্গে বিজেপির যে দাপট ছিল, তা কোথায় গেল তা নিয়েই। দিলীপ ঘোষের প্রশ্নের জবাবে সরব হন সুকান্ত ঘনিষ্ঠরা। সুকান্ত মজুমদারদের মতে, পঞ্চায়েত ভোটে তুলনা হবে আগের পঞ্চায়েত ভোটের সঙ্গে। ২০১৮সালের তুলনায় ২০২৩ এ পঞ্চায়েতের আসন বেড়েছে বিজেপির।
এদিকে বিজেপির অন্দরমহল সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত পর্যালোচনা বৈঠকে আরও একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। আর সেখানেই পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে পঞ্চায়েতে ভোট-সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে আগমী ১৯ তারিখ কলকাতায় মহামিছিলে নামতে চলেছে রাজ্য বিজেপি।তৃণমূলের ২১ জুলাই সমাবেশের আগে বিজেপির এই মিছিল নিঃসন্দেহে অন্যরকম তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। পঞ্চায়েত ভোটে জয়ী প্রার্থীদের আরও উজ্জীবিত করতেও পদক্ষেপ নিচ্ছে দল। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, দলের বিজয়ী প্রার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। জেলা নেতৃত্বের উপর এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলার জয়ীদের নিয়ে সভার আয়োজন করা হবে।
সঙ্গে বিজেপি শিবির সূত্রে এও জানা গেছে, এই মুহূর্তে রাজ্যের ৪২ লোকসভা আসনের কাজকর্ম ঠিকমতো চালানোর জন্য ৪২টি সাংগঠনিক জেলা ছিল বিজেপির। এবার তা আরও বাড়ানো হল। বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৫। অর্থাৎ এর থেকে স্পষ্ট যে, পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হতে না হতেই লোকসভার প্রস্তুতি শুরু করে দিচ্ছে বিজেপি। অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদি, জে পি নাড্ডারা অগাস্ট থেকেই রাজ্যে প্রচারে আসবেন। এর মধ্যে ১৬ অগাস্ট ১০০০টি সভা করা হবে দলের তরফে। মোদি সরকারের ৯ বছর উপলক্ষে প্রচারের জন্য এই কর্মসূচি,এমনটাই জানিয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।