উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য একটি বিশেষ দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। রবিবার টুইট করে এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। এদিকে সোমবার সকালেই বিরোধী জোটের বৈঠকে যোগ দিতে মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যাচ্ছেন বেঙ্গালুরু। সোম ও মঙ্গলবার সেখানে জোটের বৈঠকের কারণে ব্যস্ত থাকবেন তিনি। সেইকারণে তাঁর অবর্তমানে উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনা দল গঠন করে দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ও আধিকারিকদের। রবিবার টুইটে মমতা লেখেন,‘আমার সেচমন্ত্রীর অধীনে এবং বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা, সেচ ও কৃষি সচিব-সহ বন্যা কবলিত উত্তরবঙ্গে আগামিকাল একটি উচ্চ-স্তরের বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা দল পাঠানো হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে, নদীগুলির ফুলে উঠেছে, রাস্তাগুলি বিপর্যস্ত, সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, মানুষ মারা গিয়েছে। জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল (এনডিআরএফ) এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল (এসডিআরএফ)-এর সহায়তায় যুদ্ধের ভিত্তিতে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ করছেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনিটরিং করছি এবং আমি মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছি পরিস্থিতি সর্বক্ষণ তদারকি করার জন্য।’ একইসঙ্গে তাঁর আশ্বাস। কোনও চেষ্টার বাকি রাখা হবে না । মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ চলছে বলেও আশ্বস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে লাগাতার বৃষ্টিতে বেহাল উত্তরবঙ্গে একাধিক জেলা। বানভাসি পরিস্থিতি জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে। এর মধ্যে ভুটানেও বৃষ্টির জেরে হড়পা বান নেমেছে উত্তরের একাংশে। এর জেরে জলমগ্ন আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি। ভেঙে পড়েছে নদীর উপকূলের বাড়ি। জলমগ্ন অঞ্চলে আটকে পড়েছেন কয়েকশো বাসিন্দা। জলপাইগুড়ি জেলার সেচ দপ্তরের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গিয়েছে,ভুটান পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টির কারণে বৃষ্টির জলে প্লাবিত হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকের বিভিন্ন এলাকা। উপছে পড়ছে হাতিনালা। গৃহস্থের বাড়িতেও ঢুকে গিয়েছে জল। তিস্তা নদীর দোমহনী থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত এলাকায় প্রবল বর্ষণে নদীর জল ফুলে ফেঁপে ওঠায় জারি রেড অ্যালার্ট।
অন্যদিকে, প্রবল বৃষ্টিতে বাঙরি নদীর জল বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে বলে জানা গিয়েছে। তোর্ষা নদীতেও জারি ইয়োলো অ্যালার্ট। আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট থেকে টোটোপাড়ার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। আলিপুরদুয়ার পুরসভার ৩ ,৪ ৫ ,৭,৮,৯, ১৫, ১৮, ২০ নম্বর ওয়ার্ড জলে ডুবে রয়েছে বলে খবর। নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়রা। এদিকে উল্লেখ্য, আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। কোনও কোনও জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।