উইম্বলডন পেল টেনিসের নতুন রাজাকে

রোলাঁ গারোয় যেখানে শেষ করেছিলেন, অল ইল্যান্ড ক্লাবের ঘাসের কোর্টে ঠিক সেখান থেকেই যেন শুরু করেছিলেন নোভাক জকোভিচ। দুর্ধর্ষ দাপটে উঠেছিলেন উইম্বলডনের ফাইনালে। কেরিয়ারের ২৪তম মেজর ট্রফির সামনে দাঁড়িয়ে সার্বিয়ান কিংবদন্তি। রবিবাসরীয় খেতাবি লড়াইয়ে তাঁর প্রতিপক্ষ ছিল স্পেনের কার্লোস আলকারাজ। বয়সে জকোভিচের থেকে ১৬ বছরের ছোট হলেও র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে স্প্যানিশ তরুণ। তাই শীর্ষ বাছাই আলকারাজের বিরুদ্ধে খুব সহজ হবে না জোকারের লড়াই সেটা জানা ছিল। তবে অভিজ্ঞতায় ভর করে সেই কঠিন চ্যালেঞ্জ টপকাতে পারলে টেনিসের ইতিহাসে এক মহাকীর্তির শরিক হতেন তিনি। ধরে ফেলতেন মার্গারেট কোর্টকে।পাশাপাশি উইম্বলডনে রজার ফেডেরারের আটবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্বেও ভাগ বসাতেন সার্বিয়ান তারকা। তবে নোভাকের স্বপ্ন চুরমার করে দিতেই যেন আজ কোর্টে পা রেখেছিলেন কার্লোস আলকারাজ। টেনিস দুনিয়ার নতুন রাজা হতে পারেন এমন সম্ভাবনা আগেই দেখিয়েছিলেন আলকারাজ। এর আগে ইউএস ওপেন জিতে সেটা প্রমাণ করে দিয়েছিলেন। তবে রবিবার তাঁর সামনে ছিল বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা। কারণ উল্টোদিকে ছিলেন নোভাক জকোভিচ। জীবন্ত কিংবদন্তিকে মোকাবিলা করা কুড়ি বছরের ছেলেটার পক্ষে কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে জল্পনা ছিলই। বিশেষ করে প্রথম সেট ৬-১ জিতে জোকার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সহজেই উড়িয়ে দেবেন স্প্যানিশ তরুণকে। তবে যত ম্যাচ এগোতে থাকল বোঝা গেল তাতে বোঝা গেল অলকারাজ অন্য ধাতুতে গড়া। দ্বিতীয় সেট টাইব্রেকারে জিতলেন। তিন নম্বর সেট পকেটে নিলেন ৬-১ ব্যবধানে। অসংখ্যবার জোকোভিচের সার্ভিস ভাঙলেন। তার ফোরহ্যান্ড, ক্রসকোট, ড্রপ শট কিছুর জবাব ছিল না জোকারের কাছে। খেলা শেষে ফল, ১-৬, ৭-৬ (৬), ৬-১, ৩-৬ এবং ৬-৪ ব্যবধানে পরাস্ত করেন। প্রায় ৪ ঘণ্টা ৪২ মিনিট ধরে চলে এই ম্যাচ।

এখানে বলে রাখা শ্রেয়, আলকারাজ উইম্বলডনের ফাইনালে ওঠার পথে মাত্র দু’টি সেট হাতছাড়া করে প্রথম উইম্বলডনের ফাইনালে নেমেছিলেন আলকারাজ। তবে জোকারের বিরুদ্ধে অভিজ্ঞতাতেও বিস্তর পিছিয়ে ছিলেন। পিছিয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যামের অঙ্কেও। সার্বিয়ান মহারথীর ২৩টি মেজরের বিপরীতে তরুণ তুর্কির প্রাপ্তি ছিল মাত্র এক। জোকোভিচকে টিকে থাকতে গেলে চার নম্বর সেট জিততেই হত। সেটাই করলেন জোকার। জিতলেন ৬-৩ ব্যবধানে। ম্যাচ গেল পঞ্চম সেটে।চূড়ান্ত লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বাজিমাত কে করবেন বোঝা যাচ্ছিল না। অবশেষে বাজি জিতলেন আলকারাজ।

খেলা শেষে নোভাকের আলকারাজ সম্পর্কে মন্তব্য, ‘এই কোর্টের সঙ্গে এত দ্রুত যে ভাবে মানিয়ে নিয়েছো, দুর্দান্ত। কেউই এ ভাবে হারতে চায় না। তবে আবেগের চাদর সরিয়ে একটা কথা বলতে পারি, আমি গর্বিত, এখানে অনেক কঠিন ম্যাচ এবং ট্রফি জিতেছি। এ বার আমার চেয়ে সেরা প্লেয়ারের কাছে হেরেছি। ওকে অনেক শুভেচ্ছা।’ উইম্বলডনে ২০১৭ সালে শেষ বার কোনও ম্যাচ হেরেছিলেন নোভাক জকোভিচ। আরও যোগ করেন, ‘দিনের শেষে ম্যাচের কোয়ালিটিটাও গুরুত্ব রাখে। যোগ্য হিসেবেই তুমি জিতেছ।’

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 4 =