ধান সংগ্রহে গতি বাড়াতে বায়োমেট্রিক স্ক্যানিং ব্যবস্থা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত রাজ্য়ের

ধান সংগ্রহে গতি বাড়াতে আপাতত ‘বায়োমেট্রিক স্ক্যানিং’ব্যবস্থা স্থগিত রাখছে রাজ্য। ধান কেনার সময়ে কৃষকের আধার কার্ডের সঙ্গে লিঙ্ক করা মোবাইলে আসা ওটিপির সাহায্য নিতে হবে না। কারণ, এবার আর একবারে একজন কৃষকের থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ কুইন্টাল নয়,৯০ কুইন্টাল পর্যন্ত ধান কেনা যাবে। এদিকে সরকার যাতে প্রকৃত কৃষকের থেকে ন্যায্যমূল্যে ধান সংগ্রহ করতে পারে,সে জন্যই এই বায়োমেট্রিক স্ক্যানিং’ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ব্যবস্থা তুলে নেওয়ার যুক্তির পিছনে রাজ্য খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা জানান,কেন্দ্র এত দিন ‘ওপেন সেল স্কিম’-এ রাজ্যের থেকে ধান কিনত। সেই ধানই ঘুরে আসত রেশনে। কিন্তু কেন্দ্র এখন ধান কেনাই বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ রাজ্যের রেশন ব্যবস্থাকে বাঁচাতে দ্রুত ধান সংগ্রহ প্রয়োজন। তাই বায়োমেট্রিক স্ক্যানিং তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত।
এই সমস্য়ার শুরু হয়েছে গত এপ্রিল থেকে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের জন্যই গত এপ্রিল থেকে ধান সংগ্রহের কাজ গতি হারাতে শুরু করে। বিষয়টি নজরে আসতেই স্বনির্ভর গোষ্ঠী, প্রাইমারি অ্যাগ্রিকালচার কো-অপারেটিভ সোসাইটিগুলিকে কাজে লাগিয়ে সরাসরি কৃষকদের থেকে ধান সংগ্রহ শিবিরের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ পাঠানো হয় নবান্ন থেকে। নির্দেশে বলা হয়,ধান কেনার জন্য আরও বেশি সংখ্যায় শিবির খুলতে হবে। প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে অন্তত দিনে দুই থেকে তিনটি শিবির খুলতে হবে।একেক গ্রামে সাত দিনের বদলে দশ দিন করে টানা শিবির খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিকে নবান্ন সূত্রে খবর, ১৪ জুলাই পর্যন্ত এ কাজের বিশেষ অগ্রগতি না হয়নি। আর এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ নবান্নও। এদিকে খাদ্য দপ্তর সূত্রে খবর,অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহ নিগম ইতিমধ্যেই ন্যূনতম সংগ্রহমূল্যে প্রায় ৫০ লক্ষ টন ধান কিনেছে। তবে এই পরিমাণ যে যথেষ্ট নয় তাও জানানো হয়েছে নবান্ন সূত্রে।

তবে এই বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা তুলে দেওয়ায় অনেকেই সিঁদুরে মেঘ দেখা শুরু করেছেন। অনেকেই আশঙ্কা করছেন,বায়োমেট্রিক স্ক্যানিং ব্যবস্থা তুলে নেওয়ায় দালালচক্রের রমরমা আবার ফিরে আসতে পারে। কারণ, এই বায়োমেট্রিক ব্যবস্থার শুরু হয় যখন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে অভিযোগ আসতে শুরু করে যে রাজ্য সরকার প্রকৃত কৃষকের বদলে দালালদের থেকে ধান সংগ্রহ করছে। এতে প্রত্যন্ত এলাকার ক্ষুদ্র চাষিরা এই দালালদের কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হতেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 1 =