পঞ্চায়েত নির্বাচন যে যথেচ্ছ হিংসার ছবি দেখা গেছে রাজ্য জুড়ে, তারই প্রতিবাদে রাজপথে নামল বিজেপি। এই হিংসার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে একাধিক বিজেপি কর্মী সমর্থকেরও। এই ইস্যুকে সামনে রেখে বুধবার বিকেলে মহামিছিলে পা মেলাতে দেখা যায় রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ সহ অন্যান্য রাজ্য স্তরের নেতাদেরও। এদিনের মিছিল থেকে রাজ্যে বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ঘোষণা, আগামী ২১শে জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবসের দিন জেলায় জেলায় বিডিও অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি করা হবে। এরই পাশাপাশি এদিনের মিছিল থেকে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আরও জানান,আমাদের কাছে খবর আছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত জেলার বিডিওদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়। এরই সূত্র ধরে বিজেপি রাজ্য সভাপতির দাবি, সরকারি আমলাদের ভোট লুঠের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের পাশাপাশি,সরকারি আমলাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে বুধবার বিকেলে কলেজ স্কোয়ার থেকে এই মিছিল শুরু হয়। মিছিলে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ,বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী,সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় সহ অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব অংশগ্রহণ করেন।
এদিন মিছিলের পর পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা, ভোট লুঠের ঘটনা নিয়ে সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। পাশাপাশি,আগামী দিন বর্তমান সরকারের আরও একটি দুর্নীতির বিষয়ে তিনি মানুষের সামনে তুলে আনবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিতে দেখা যায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে।
প্রসঙ্গত,পঞ্চায়েত নির্বাচনের শুরু থেকেই অনিয়মের অভিযোগ তুলে রাজ্যের নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয় বিজেপি। মনোনয়ন পর্বে অশান্তি থেকে শুরু করে ভোট লুঠ, বিজেপি কর্মীদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে শাসক দলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও গোটা পঞ্চায়েত নির্বাচনে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি বিজেপি। সেক্ষেত্রে ভোট লুঠের বিষয়টিকেই সামনে এনেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপি সভাপতি পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রহসন বলে দাবি করেছেন আগেই।
আগামী ২১শে জুলাই অন্যান্য বছরের মতোই শহিদ দিবস পালন করবে তৃণমূল কংগ্রেস। মঞ্চ থেকেই আগামী লোকসভা নির্বাচনের জন্য দলনেত্রী কর্মিদের উদ্দেশে বার্তা দেবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। আর এই ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেই ২০২৪-এর লোকসভানির্বাচনকে পাখির চোখ করে ভবিষ্যতের কর্মপন্থা যে ঠিক করা হবে এটাই রীতি। আর এখানেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারনা, তৃণমূল কংগ্রেসকে চাপে রাখতে এদিন বিজেপির তরফ থেকে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়।