রাজ্যের সব পুরসভা এলাকায় ইভি চার্জিং স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। এর জন্য পুরসভাগুলির কাছে সম্ভাব্য জায়গা ও জমির তালিকাও চেয়ে পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রে খবর। এই তালিকা হাতে পাওয়ার পর অগাস্টেই ইভি চার্জিং স্টেশন গড়ে তোলার জন্য টেন্ডার ডাকবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা অর্থাৎ ডব্লিউবিএসইডিসিএল। টেন্ডারে যে সমস্ত সংস্থা নির্বাচিত হবে, চার্জিং স্টেশন গড়তে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে লেটার অফ ইনটেন্ট বা এলওআই। পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থা চার্জিং স্টেশন থেকে যে আয় করবে, তার একটা অংশ তারা বণ্টন সংস্থা ও পুরসভাকে দেবে। এতে বিকল্প আয়ের পথ খুলে যাবে পুরসভাগুলির।
এই প্রসঙ্গে বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান, ‘সব পুরসভাকেই চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিছু পুরসভার কাছ থেকে ফিডব্যাক এসেও গিয়েছে। বাকি ফিডব্যাক জমা পড়লে টেন্ডার ডাকা হবে।’
এই ব্যাপারে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক আধিকারিক জানান, ‘পুরসভাগুলির মালিকানাধীন ফাঁকা জায়গায় বা জমিতে ইভি চার্জিং স্টেশন গড়ে তোলা হবে। সে জন্য আমরা পুরসভাগুলির কাছে সম্ভাব্য জায়গার তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছি। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থা ডব্লিউবিএসইটিসিএল ও পর্যটন দপ্তরের কাছেও তালিকা চাওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ২০১টির মতো জায়গা পাওয়া গিয়েছে।’
ইতিমধ্যেই বণ্টন সংস্থার সাব-স্টেশনগুলিতে রিলায়েন্স-সহ একাধিক সংস্থাকে ইভি চার্জিং স্টেশন গড়ে তোলার জন্য জায়গা দেওয়া হচ্ছে। জানুয়ারিতে ৫১টি সাব-স্টেশনের ফাঁকা জায়গায় চার্জিং স্টেশন গড়ে তোলার জন্য এলওআই দিয়েছিল বণ্টন সংস্থা। তার মধ্যে অনেকগুলি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। চলতি মাসে আরও ৫৩টি ইভি চার্জিং স্টেশন গড়তে এলওআই দিয়েছে বণ্টন সংস্থা। তার মধ্যে বণ্টন সংস্থার ২১টি সাব-স্টেশন এবং সংবহন সংস্থার ১৪টি সাব-স্টেশনের ফাঁকা জায়গায় চার্জিং স্টেশন তৈরি হবে। এছাড়া পর্যটন দপ্তরের ১৮টি ‘পথসাথী’-তেও ব্যাটারিচালিত গাড়ির ব্যাটারি চার্জিংয়ের পরিকাঠামো গড়ে উঠবে।
এরই পাশাপাশি ওই আধিকারিক এও জানান, আগামী ছ’মাসের মধ্যে ৫৩টি স্টেশনের নির্মাণ কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। এই সমস্ত ইভি চার্জিং স্টেশনে বিদ্যুতের লাইন পৌঁছে দেবে বণ্টন সংস্থা। যে সংস্থা ওই চার্জিং স্টেশন চালাবে তাদের ইউনিট প্রতি সাড়ে ৫ টাকা ও ৬ টাকা দরে বিদ্যুৎ বিক্রি করবে বণ্টন সংস্থা। এছাড়া বণ্টন সংস্থা রেভিনিউ শেয়ারিং বাবদ চার্জিংয়ের প্রতি ইউনিট পিছু আলাদা করে অর্থ পাবে। সংবহন সংস্থা ও পথসাথীর জায়গায় চার্জিং স্টেশনের ক্ষেত্রে তারাও আয়ের অংশ পাবে।
ফাস্ট চার্জিংয়ের ক্ষেত্রে গ্রাহককে ইউনিট প্রতি সর্বোচ্চ ১৮ টাকা দাম দিতে হবে। এদিকে রেভেনিউ শেয়ারিং বাবদ বণ্টন সংস্থা এখনও পর্যন্ত ইভি চার্জিং স্টেশনগুলি থেকে ইউনিট প্রতি ১ টাকা থেকে ৫ টাকা পাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।