গোটা পঞ্চয়েত নির্বাচন পর্বেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে দেখা গেছে ভাঙড়কে। ভোটের পরেও দফায় দফায় ছড়িয়েছে অশান্তি। চলেছে গুলি, পড়েছে বোমা। মৃত্যুও হয়েছে বেশ কয়েকজনের। এই পরিস্থিতির মাঝেই এবার রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে নিরাপত্তা দেওয়া হল আরাবুল ইসলামের ছেলে হাকিমুল ইসলামকে। সেক্ষেত্রে সর্বক্ষণের জন্য একজন করে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী থাকবেন হাকিমুল ইসলামের সঙ্গে। নিরাপত্তা প্রদানের জন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন হাকিমুল। এখানে বলে রাখা শ্রেয়, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় একাধিকবার হুমকির মুখে পড়তে হয় আরাবুল ইসলামের ছেলে হাকিমুল ইসলামকে। এরপর বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়। এরপরই এই নিরাপত্তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শুধু হাকিমুল ই নন, পাশাপাশি তৃণমূল নেতা খইরুল ইসলাম ও আহসান মোল্লাও পাচ্ছেন একজন করে নিরাপত্তা রক্ষী।
এই প্রসঙ্গে হাকিমুল বলেন, ‘প্রশাসনকে আমার জানিয়েছিলাম যে প্রকাশ্যে আমাদের উপরে প্রাণনাশের হুমকি আসছে। আমাদেরকে মেরে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। সওকত মোল্লা, আরাবুল ইসলাম ও আমাকে। আইএসএফ-এর গুণ্ডাবাহিনী প্রকাশ্যে সবাদমাধ্যমের সামনে ধমকাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য নেতৃত্বকেও। আমরা জানিয়েছিলাম প্রশাসনকে। প্রশাসন যেটা ভাল বুঝেছে করেছে, আমার ধন্যবাদ জানাচ্ছি প্রশাসনকে।’
শুধু হাকিমুল নয়, প্রাণনাশের হুমকির কথা শোনা গিয়েছিল আরাবিলু ইসলামের গলাতেও। পঞ্চায়েক নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর একসময় আরাবুলকে বলতে শোনা যায়, ‘প্রতিটা আইএসএফ-এর কর্মী বলছে আরাবুলের মাথা চাই, হাকিমুলের মাথা চাই, সওকত মোল্লার মাথা চাই, ভাঙড়ে আমরা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছি।’
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, গত জুন মাসেই এলাকার আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সুরক্ষা দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তার আগে নওশাদকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তারপরেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে নিরাপত্তা দেওয়া হয় নওশাদকে। এদিকে বারুইপুরের এসডিপিও-র ওপর গুলি চালানর ঘটনায় কুখ্যাত সমাজবিরোধী অহিদুল আলি মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বারাসতের পূর্ব খিলকাপুর পঞ্চায়েতের বাবপুর এলাকায় আইএসএফ-এর রাজ্য সভাপতি বিশ্বজিৎ মাইতির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। আইএসএফ নেতার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করার পরেই প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে তৃণমূল। অহিদুলকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বিশ্বজিৎকেও গ্রেফতারের জানিয়েছে শাসকদল। পালটা আইএসএফ-এর দাবি যেহেতু ভাঙড়ে শাসকদল পঞ্চায়েত গড়ছে, তাই আরাবুল বাহিনীর হাতে নিজের প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে বুঝতে পেরেই নিজেকে বাঁচাতে বিশ্বজিৎ মাইতির বাড়ি তার আশ্রয় নিয়েছিল সে।