নন্দীগ্রাম বিধানসভা এলাকার পঞ্চায়েতের ১৫ জন বিজেপি প্রার্থীকে রক্ষাকবচ দিল আদালত। আদালত সূত্রে খবর, আগামী সোমবার পর্যন্ত গ্রেফতারির ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। বিজেপির তরফ থেকে দাবি করা হয় যে, এখনও পর্যন্ত ১৮টি এফআইআর করা হয়েছে। পাশাপাশি এও দাবি করা হয় এগুলি ভুয়ো। একইসঙ্গে বিজেপির তরফ থেকে এও অভিযোগ করা হয়েছে যে, বিজেপি যাতে বোর্ড গঠন না করতে পারে, তার জন্যই ভুয়ো মামলা করা হয়েছে।
পাল্টা রাজ্যের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন কুখ্যাত দুষ্কৃতী রয়েছে। এই প্রশ্ন করার পরেই বিচারপতির তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয়, এরা সবাই জয়ী প্রার্থী কি না। রাজ্যের তরফ থেকে উত্তর দেওয়া হয়, সেটা জানি না।
বিচারপতি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘এরা বিজেপি করে কি না সেটা জানেন, আর জয়ী প্রার্থী কি না সেটা জানেন না?’ এরপরই দৃশ্যত কিছুটা বিরক্ত হতেই দেখা যায় বিচারপতিকে। আদালত সূত্রে খবর, এরপরই আগামী সোমবার পর্যন্ত তাঁদের রক্ষাকবচ দেন বিচারপতি। আগামী সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি। কোন কোন মামলার কী স্ট্যাটাস, সোমবার তা জানাবেন মামলাকারীদের আইনজীবী।
এর আগে নন্দীগ্রামের মেঘনাদ পাল-সহ ৭ জন জয়ী বিজেপি প্রার্থীকে রক্ষাকবচ দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এদিন রক্ষাকবচ দেওয়া হল আরও ১৫ জনকে। সব নিয়ে ২২ বিজেপি প্রার্থী শেষ পর্যন্ত রক্ষাকবচ পেলেন হাইকোর্ট থেকে।
প্রসঙ্গত, বরাবরই নন্দীগ্রাম বাংলার রাজনৈতিক মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, ৩৪ বছরের বাম শাসনের পতনের বীজ রোপিত হয়েছিল এই নন্দীগ্রামেই। জমি আন্দোলনের হাত ধরে বাংলার হাল ধরার পথ প্রশস্ত করেছিল তৃণমূল। কিন্তু সেই তৃণমূলেই এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বেশ ভাল ফল করেছে বিজেপি। এবারের নির্বাচনে নন্দীগ্রামের ১ ও ২ নম্বর ব্লকের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে বিজেপি। কিন্তু ভোট মিটতেই জয়ী প্রার্থীদের হুমকি, ভয় দেখানো, মিথ্যা মামলার ফাঁসানোর অভিযোগ উঠছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। জল গড়ায় আদালত পর্যন্ত। রক্ষাকবচ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা।