অস্ত্র দেখিয়ে অপহরণ-ই করা হয়েছিল, এমনটাই দাবি পঞ্চসায়র কাণ্ডে অপহৃতদের

পঞ্চসায়র কিডন্যাপ কাণ্ডে নয়া মোড়। দেড় দিন পরে বাড়ি ফিরে পুরো বয়ানই বদলে ফেললেন অপহৃতরা। ফের একবার বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল তৃণমূলের  বিরুদ্ধে। তাঁরা জানান, গেস্ট হাউস থেকেই গান পয়েন্টে অপহরণ করা হয়। চাপে পড়েই প্রথম ভিডিয়ো বার্তা তাঁরা দিয়েছিলেন, এমনটাই জানালেন  মথুরাপুরের বিরোধী শিবিরের এই চার জয়ী প্রার্থী। গোপন ডেরায় তাঁদের সাদা কাগজে সই করানো হয়েছিল বলেও অভিযোগ। ভয় দেখিয়ে চাপ দিয়ে বয়ান রেকর্ড করা হয়। প্রাণ বাঁচিয়ে ঘরে ফিরে প্রকৃত সত্যটা সামনে আনলেন বিরোধী শিবিরের চার প্রার্থী।

প্রসঙ্গত, শনিবার গভীর রাতে বিজেপির তিন প্রার্থী ও সিপিএম সমর্থিত এক নির্দল প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পঞ্চসায়র থানায় ইতিমধ্যেই আবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সিপিআইএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও এরইমধ্যে পঞ্চসায়র থানায় আসে একটি চিঠি। যাতে ওই চার জয়ী প্রার্থী জানিয়েছিলেন, তাঁদের কেউ অপহরণ করেনি। তাঁরা স্বেচ্ছাতেই গিয়েছিলেন। এরইমধ্যে পুলিশ সূত্রে খবর মেলে, চারজনকে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দেখা গিয়েছে। যদিও এখন তাঁদের দাবি, জোর করে তাঁদের থেকে ওই বয়ান লিখিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

রবিবার সকালে কৃষ্ণচন্দ্রপুরের অন্ধমুনিতলা গ্রামের ৫৬ নম্বর বুথের বিজেপি প্রার্থী পুজা ছাঁটুইয়ের বাড়িতে এসে দেখা গেল সেখানে রয়েছেন বাকি তিন জয়ী প্রার্থীও। শনিবার রাতের ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এদিন ফের একবার তৃণমূলের দিকেই আঙুল তোলেন তিনি। বলেন, ‘২৭ তারিখ রাতে কলকাতার এক গেস্ট হাউসে আমরা খাচ্ছিলাম। খাওয়া-দাওয়া তখনও শেষ হয়নি। সেই সময় তৃণমূলের কিছু দুষ্কৃতী গাড়ি নিয়ে চলে আসে। আমরা প্রথমে বুঝতে পারিনি কী হচ্ছে। আচমকা আমাদের অনেক রকম অস্ত্র দেখিয়ে আমাদের ওখান দিয়ে নিয়ে যায়। জোর করে গাড়িতে তোলে। গাড়ি চলতে শুরু করার ১০ মিনিট পর একটা জায়গায় থেমে যায়। ওই জায়গায় দেখি আমাদের প্রধান বাপি হালদার দাঁড়িয়ে আছেন। গাড়ি থামিয়ে আমাদের নদী পার করা হয়। সেখানে একটা ফ্ল্যাট আছে। ওখানেই আমাদের রাখা হয়।’

প্রসঙ্গত, কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫ আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ৪ আসন। বিজেপির খাতায় ৬ আসন। সিপিএমের খাতায় ৩, সিপিএম সমর্থিত নির্দলদের খাতায় ২। অভিযোগ, ভোট গণনার পরেই শাসকদলের হুমকির মুখে পড়েন বিরোধী শিবিরের ১১ জয়ী প্রার্থী। সকলেই ভয়ে এলাকা ছাড়েন। বোর্ড গঠনের কথা শুরু হতেই তাঁরা ঘরে ফেরার তোড়জোড় করছিলেন বলে শোনা যায়। এরইমধ্যে বিরোধী শিবিরের চার প্রার্থীকে অপহরণ করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen + 20 =