নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে আদালতের নির্দেশে তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় দুই গোয়েন্দা সংস্থা। ইতিমধ্যেই অনেক প্রভাবশালী গ্রেফতারও হয়েছেন। পাশাপাশি দুর্নীতি সংক্রান্ত অনেক তথ্যও উঠে এসেছে সামনে। অযোগ্যদের চাকরি দিতে বিভিন্ন ভাবে জালিয়াতি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে সিবিআই সূত্রে। ওএমআর জালিয়াতি করে যেমন নিয়োগ করা হয়েছে, তেমনই তালিকায় না থেকেও চাকরি পেয়েছেন অনেকে। আবার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও প্যানেল থেকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। যাঁরা বেশি নম্বর পেয়ে ওপরের দিকে রয়েছেন তাঁদের বাদ দিয়ে কম নম্বর পেয়ে পিছনে থাকা প্রার্থীদের দেওয়া হয়েছে চাকরি, এমন অভিযোগও উঠেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কিছু বিভাগে মোট নিয়োগের একাংশতে জালিয়াতি হয়েছে। আবার কোনও কোনও নিয়োগ হয়েছে সম্পূর্ণ জালিয়াতি করেই।
সিবিআই-এর তথ্য অনুযায়ী, গ্রুপ সি শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে সবটাই জালিয়াতি হয়েছে। এমনটাই ধরা পড়েছে সিবিআই তদন্তে। ওই পদে মোট ২ হাজার ৩৭ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সিবিআই-এর তথ্য বলছে, গ্রুপ সি-তে ওএমআর-এ গণ্ডগোল ছিল ৩ হাজার ৪৮১ জনের। কোনও তালিকায় না থাকলেও নিয়োগপত্র পান ১ হাজার ৭১৫ জন। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া তালিকা থেকে ৩৮১ জন নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন।
গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মী পদে মোট ৪ হাজার ৪৮৭ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ওএমআর-এ গণ্ডগোল ছিল ২ হাজার ৮২৩ জনের। তালিকায় না থেকেও নিয়োগ হয়েছিল ১৪১ জনের। এদিকে আবার বাতিল হওয়া প্যানেল থেকে ৬০৭ জনকে নিয়োগ করা হয়। এই ৬০৭ জনের মধ্যে ১০ জন আবার পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন। তা সত্ত্বেও চাকরি পান।
এদিকে নবম দশম শ্রেণির শিক্ষক পদে মোট নিয়োগ করা হয়েছিল ১১ হাজার ৪২৫ জনকে। এর মধ্যে ৯৫২ জন ওএমআর জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন। তালিকায় না থাকলেও ৫২ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া প্যানেল থেকে ১৮৩ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগেও একই ছবি ধরা পড়েছে। একাদশ ও দ্বাদশে মোট ৫ হাজার ৫০০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। তার মধ্যে ৯০৭ জনের ওএমআর-এ গণ্ডগোল সামনে এসেছে। তালিকায় না থেকেও নিয়োগ পেয়েছেন ৭৮ জন এবং মেয়াদ শেষ হওয়া প্যানেল থেকে ৩৯ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। অর্থাৎ এই দুই ক্ষেত্রে নিয়োগ হওয়া শিক্ষকের এক বিরাট অংশ চাকরি পয়েছেন জালিয়াতি করে। অর্থাৎ সিবিআই তদন্ত যা বলছে তাতে শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে জালিয়াতির অঙ্কটা আরও বৃহৎ। গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি শিক্ষাকর্মী নিয়োগে কোনও ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ, কোনও ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ জালিয়াতি হয়েছে।