আদালতে মুখ থুবড়ে পড়ল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে বিজেপি নেতাকর্মীদের বাড়ি ঘেরাওয়ের অভিযান কর্মসূচি। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বিজেপি-র সর্ব স্তরের নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ ঘেরাও করে যে জঙ্গি আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সোমবার তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ‘বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন অভিষেক। যার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে বিজেপি। শুধু তাই নয় অভিষেক ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআরও দায়ের করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার সেই কর্মসূচি পালনে ‘না’ প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চের।
এদিন মামলাকারী বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী এসএস পাটোয়ালিয়া সওয়াল করেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ২১ জুলাইয়ের সভা থেকে আগামী ৫ অগাস্ট গোটা রাজ্যের বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করা নির্দেশ দিয়েছেন তাঁর পার্টি কর্মীদের।’ বুধবার মামলার ইস্যু শোনার পরই রাজ্যের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ হন প্রধান বিচারপতি। এরপরই তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘কেউ যদি এই ধরনের মন্তব্য করে প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেবে না? ধরুন কেউ বললো হাইকোর্ট ঘেরাও করবে। তখনও প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেবে না?’ এরপরই রাজ্যের তরফে আইনজীবী সপ্তাংশু বসু এর উত্তরে সওয়াল করতে গিয়ে জানান, ‘এই কর্মসূচি করা হবে প্রতীকী। সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যে ৬ টা চলবে কর্মসূচি। প্রত্যেকের বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে। এখানে সাধারণ মানুষ কোনও ভাবেই অসুবিধায় পড়বেন না। ব্লকে-ব্লকে করা হবে কর্মসূচি।’ রাজ্যের তরফের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম বলেন, ‘২১ জুলাই সভার জন্য আদালতে কোনও কাজ হয়নি। সাড়ে এগারোটার মধ্যে কোর্ট রুম ফাঁকা হয়ে যায়। আমরা বিচারপতিরা উঠে যেতে বাধ্য হই। রাজনীতি করুন। আপনি জিতুন,অন্যরা হারুক। আপনি হারুন,অন্যরা জিতুক। কিন্তু তার জন্য সাধারণ মানুষ কেন ভুগবে?’ এরপরই ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় আগামী ৫ অগাস্ট কোনও রকম ঘেরাও কর্মসূচি করা যাবে না। সাধারণ মানুষের সমস্যা হবে এমন কোনও কর্মসূচি করা যাবে না। রাজ্যকে হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ।