‘আমরা বিভ্রান্ত, কোন মামলা শুনব, কোন মামলা শুনব না, সেটা বুঝতেই পারছি না।’ রাজ্যের একের পর এক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এমনই বিভ্রান্তির মুখে দেশের শীর্ষ আদালত। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শুনানিতে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোস ও বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর বেঞ্চ সোমবার এও জানান, ‘এখন এসএসসি, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নাকি ২০১৪, ২০১৬, ২০১৭- কোন মামলা শুনব, আমরা বুঝতেই পারছি না।’
সূত্রে খবর, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে তিনটি আলাদা এজলাসে আলাদা বিষয়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল। অর্থাৎ কোনটা এসএসসি, কোনটা প্রাইমারি, কোনওটা আবার অন্য কোনও ইস্যুতে। গত কয়েক মাসেই সুপ্রিম কোর্টে এরকম একাধিক মামলায় একাধিক বেঞ্চে পিটিশন ফাইল হয়। ফলে কলকাতা হাইকোর্টের পাশাপাশি দেশের শীর্ষ আদালতেও বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলার শুনানি চলছে। কিছু মামলার শুনানি এখনও বাকি। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা এই মামলাগুলিকে নিয়ে আগে শ্রেণিবিন্যাসও করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গে স্কুলে নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলা এক যোগে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এর আগে বিচারপতি হৃষিকেশ রায় ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ এমনটা জানিয়েছিল। বিচারপতি হৃষিকেশ রায় গত মার্চ মাসেই বলেছিলেন, ‘নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সব মামলা এক যোগে শুনানি করাই শ্রেয়।’ আর এখানেই সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, এতগুলো মামলার ভিন্ন শুনানির ক্ষেত্রেও অনেক সময় লাগবে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে তাই এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলা সংক্রান্ত কোনও শুনানি হয়নি। যদিও শীর্ষ আদালতে এসএসসি-র আইনজীবী সওয়াল করেছিলেন, এসএসসি-র শিক্ষাকর্মী নিয়োগ মামলা ও স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ মামলা দুটি পৃথক। সেক্ষেত্রে একসঙ্গে শুনানিতে জটিলতা তৈরি হতে পারে।
আর এই সব মামলা দেখে বাংলার নিয়োগ দুর্নীতির এক গুচ্ছ মামলা নিয়ে শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরাই যে বিভ্রান্ত, তা সোমবারের শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট। তবে সুপ্রিম কোর্ট এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, পরবর্তীতে একটি দিন ধার্য করা হবে এবং সেদিন সব মামলার শুনানি একসঙ্গে হবে। তবে পুরনো যে মামলাগুলিতে স্থগিতাদেশ দেওয়া রয়েছে, তা আপাতত স্থিতাবস্থাতেই থাকবে বলেও জানানো হয় আদালতের তরফ থেকে।