সোমবার বিকেলে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখতে বেসরকারি হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা থেকে বেরিয়ে সোজা হাসপাতালে চলে যান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী যাওয়ার কিচ্ছুক্ষন আগেই ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন সাপোর্ট থেকে বার করে আনা হয় রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে বাইপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হবে বলে হাসপাতাল সুত্রের খবর। এদিকে অসুস্থ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘এখন অনেকটাই ভালো আছেন বুদ্ধদেববাবু। ওঁর জ্ঞান আছে ভালোই। আমাকে দেখে হাত নাড়লেন।’ একইসঙ্গে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি প্রশংসা করেন। মমতাও জানান, ‘ওঁকে এখন ভেন্টিলেশন থেকে বার করা হয়েছে। তবে বাইপ্যাপ সার্পোটে আছেন। আমার মনে হয় প্যারামিটারগুলো অনেকটাই ঠিক আছে। তবে সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানাবেন চিকিৎসকেরা। ওঁর জন্য বোর্ড গঠন করা হয়েছে।’ এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসক সৌতিক পণ্ডা জানান, ‘আমরা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে ভেন্টিলেশন সার্পোট থেকে বাইরে বার করে আনার চেষ্টা করছিলাম। এদিন সকাল থেকে সে প্রক্রিয়া চলছিল। অবশেষে তাঁকে সফলভাবে ভেন্টিলেশনের বাইরে আনা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যা শারীরিক অবস্থা, তাতে আমরা খুশি। আমরা প্যারামিটারগুলো মনিটর করছিলাম। আমরা আবার নন-ইনভেনশিভ ভেন্টিলেশনে ফিরে যেতে পেরেছি। ভেন্টিলেশন খুলে নেওয়ার পর থেকেই তাঁর শারীরিক প্যারামিটারগুলির উপর আমরা নজর রাখছি। এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল আছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সারাক্ষণ নজরদারি চলছে। প্যারামিটারগুলির ওঠা নামা নোট করা হচ্ছে।’ একইসঙ্গে তিনি জানান, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ তবে চিকিৎসকদের বিশ্বাস, যে ধরনের উন্নতি এখনও পর্যন্ত দেখা গিয়েছে, তাতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এই কঠিন সময় পার করতে পারবেন বলেই তাঁরা আশা রাখছেন।
এদিকে হাসপাতাল সূত্রে খবর, সোমবার সকালে সিটি স্ক্যান করানো হয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। ফুসফুসের সংক্রমণ পরিস্থিতি জানতেই এই স্ক্যান করানো হয়। কারণ, এই স্ক্যানের রিপোর্টের ভিত্তিতেই চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তার ভেন্টিলেশনের মাত্রা কম করা যাবে কি না। এরপর দুপুরে মেডিকেল বোর্ড মিটিংয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা।
উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন ধরেই জ্বর ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। এর মধ্যে সিওপিডি-র সমস্যা রয়েছে তাঁর। শুক্রবার সকাল থেকেই শ্বাসকষ্ট বাড়তে শুরু করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। শনিবার পরিস্থিতির অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। এদিকে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল বোর্ড গঠিত হয়।