বিক্ষোভকারীর হাত কামড়ে দেওযার ঘটনার পর এবার সামনে এল গলা টিপে ধরার ঘটনাও। এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের তুমুল বিক্ষোভে বুধবার উত্তাল হয়ে ওঠে সরকারি বিধায়ক আবাসন চত্বর। আর এই বিক্ষোভে ঘৃতাহুতি হয় বিক্ষোভকারীদের হঠানোর সময়। এই সময়ই প্রিজন ভ্যানে তুলতে গিয়ে এক চাকরিপ্রার্থীর গলা টিপে ধরেন এক মহিলা পুলিশ কর্মী। এর আগে এক চাকরিপ্রার্থীর হাতে কামড়ে দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। এবার এল গলা টিপে ধরার অভিযোগ।
হকের দাবি তাঁদের। তাই আবারও রাজপথে চাকরিপ্রার্থীরা। বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ বিক্ষোভ দেখাতে দেখাতে কিড স্ট্রিটে এমএলএ হোস্টেলের সামনে বসে পড়েন এসএলএসটি-র ২০১৬’র বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা। বিক্ষোভের কারণে আটকে পড়েন বিধায়করা। এদিকে গত ৮৭১ দিন ধরে গান্ধিমূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন তাঁরা। এই বিক্ষোভের জেরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় এমএলএ হোস্টেলের সামনে। শাসক-সহ বিরোধী দলের একাধিক বিধায়ককে দেখা যায় হোস্টেলের গেটের ভেতর দাঁড়িয়ে থাকতে। পুলিশ সেখানে পৌঁছতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কিড স্ট্রিট চত্বর। প্রথমে মাইকিং করে চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না থেকে উঠে যেতে বলেন পুলিশ আধিকারিকরা। কিন্তু নিজেদের দাবিতে অনড় থাকেন তাঁরা। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর শুরু হয় বলপ্রয়োগ। টেনে হিঁচড়ে চাকরিপ্রার্থীদের তোলার চেষ্টা করে পুলিশ। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। রীতিমতো চ্যাঙদোলা করে তাঁদের গাড়িতে তোলার চেষ্টা চলতে থাকে। পাল্টা প্রতিরোধে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাস্তায় শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। ওই ধস্তাধস্তির মাঝেই চাকরিপ্রার্থীরা প্রশ্ন করতে থাকেন, ‘আমাদের কী অপরাধ, আমরা কী করেছি?’ পুলিশ অবশ্য বিক্ষোভকারীদের কোনও কথারই তোয়াক্কা করেনি।
এরই মধ্যে তনয়া বিশ্বাস নামে একটি চাকরিপ্রার্থীকে ভ্যানে তোলার সময়ে গলা টিপে ধরে বলে অভিযোগ। চাকরিপ্রার্থীদের একজন বলেন,‘আমরা ভিক্ষার চাকরি চাই না স্যর। বেঁচে থেকে চাকরি করতে চাই, পরিবারের দায়িত্ব নিতে চাই। ১০টা থেকে ৫টা স্কুলে থাকতে চেয়েছি, আর কী চেয়েছি? পরিবারকে সাহায্য করতে পারি না, এর থেকে যন্ত্রণার আর কী আছে?’ এদিকে এই ট্যান হেঁচড়ার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। এদিকে এদিন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা যায় বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকেও।
এদিনের এই ঘটনায় বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘যেভাবে টেনে হিঁচড়ে তোলা হত, সেটা কলঙ্ক। রুচিহীন রাজনীতির জন্যই এই ঘটনা ঘটছে।’ এর পাশাপাশি মনোজ টিগগা, শঙ্কর ঘোষরা জানান, ‘যোগ্য শিক্ষক পদপ্রার্থীদের নিয়োগের ব্যাপারে টালবাহানা করছে সরকার। আমরা বারবারই বিধানসভার অভ্যন্তরে এ ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি ৷’ তবে এদিন এমএলএ হস্টেলের বাইরে বিক্ষোভ নিয়ে অসন্তুষ্ট হন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর আগে এক চাকরিপ্রার্থীর হাতে পুলিশ কর্মীর কামড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। রবীন্দ্র সদনের এক্সাইড মোড়ে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভে চাকরিপ্রার্থী অরুণিমা পালের হাতে কামড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এক মহিলা কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। তাঁকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে রাজ্য মহিলা কমিশন।