যে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হচ্ছে তাঁর সঙ্গে জড়িত নন, দাবি নুসরতের

ফ্ল্যাট নিয়ে যে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হচ্ছে তার সঙ্গে তিনি কোনও ভাবে জড়িত নন বলে দাবি তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের। অভিযোগ উঠেছে, ফ্ল্যাট পাইয়ে দেওয়ার নামে নুসরত জাহানের একটি সংস্থার বহু ব্যাঙ্ককর্মীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকলেও  কাউকে ফ্ল্যাট দেওয়ার হয়নি। এদিকে নুসরত ওই সংস্থার অন্যতম অধিকর্তা ছিলেন। অভিযোগের এখানেই শেষ নয়, পাশাপাশি এও বলা হয়েছে সেই টাকায় নুসরত পাম অ্যাভিনিউয়ে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন।

এই অভিযোগের জবাব দিতে তৃণমূল সাংসদ বুধবার প্রেসক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন। নুসরতের দাবি, তিনি ২০১৭ সালে কোম্পানি থেকে পদত্যাগ করেন।  ওই কোম্পানিতে তাঁর কোনও ছিল না।  তৃণমূল সাংসদ আরও জানান, ওই সংস্থা থেকে তিনি ফ্ল্যাট কেনার জন্য প্রায় ১কোটি ১৬ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। পরে প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা সুদ সমেত ফেরত দিয়েছেন।  তাঁর আরও দাবি, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।

এদিকে প্রতারিতদের ব্যাঙ্ককর্মীদের  অভিযোগ, ২০১৪ সাল থেকে দফায় দফায় ফ্ল্যাট দেওয়ার নামে টাকা নেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছিল, পরবর্তী চার বছরের মধ্যে ফ্ল্যাট হাতে তুলে দেওয়া হবে। তবে ২০১৮ সালের পরও ফ্ল্যাট পাননি তাঁরা। এরপর ওই প্রতারিতদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা  সোমবার সিজিও কমপ্লেক্সে যান ইডির কাছে অভিযোগ করতে। এদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও দাবি করেন, এটি একটি বিশাল কেলেঙ্কারি।

এরপরই বুধবার নুসরত সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় আমি কারও ফোন ধরতে পারিনি। এরপরই অভিনেত্রী সাংসদ বারবার দাবি করেন,  ‘তিনি কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন। এ ব্যাপারে তিনি ৩০০ শতাংশ নিশ্চিত। তিনি বলেন, যাঁরা ভুল করে, ভয় তাঁদের হয়।  আমি এমন কোনও কাজ করিনি, ভবিষ্যতেও করবও না। আমি চ্যালেঞ্জ করতে পারি দুর্নীতির সঙ্গে কোনও যোগ যদি দেখাতে পারেন, তাহলে আপনারা যা বলবেন তাই হবে।’

এদিকে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। তিনি বলেন, আদালতের বিচারাধীন বিযয়ে কারও হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। আইন আইনের পথে চলবে। তিনি উল্টে সংবাদমাধ্যমকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তাঁদের কী করা উচিত, সে সম্পর্কে নানা মন্তব্য করেন। সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে তিনি রীতিমতো মেজাজ হারিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে চলে যান। কার্যত সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নেরই জবাব দেননি। নুসরতের সাংবাদিক বৈঠক শেষ হতে না হতেই সাংবাদিক সম্মেলন ডাকে বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। তাঁর দাবি, নুসরত ওই সংস্থার ডিরেক্টর থাকাকালীন ব্যাঙ্ককর্মীদের থেকে টাকা নিয়েছেন। ওই কোম্পানি থেকেও দফায় দফায় তিনি টাকা তোলেন। এই দাবির সমর্থনে শঙ্কুদেব বিভিন্ন নথিও হাজির করেন। তাঁর প্রশ্ন,  একজন ডিরেক্টরকে কেন তাঁর সংস্থা ঋণ দেবেন। শঙ্কু বলেন, আমাদের হাতে যা নথি আছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, তিনি ১ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। অথচ সাংবাদিক বৈঠকে নুসরত দাবি করলেন, ঋণ নিয়েছিলেন  ১কোটি ১৬ লক্ষ টাকা। বিজেপি নেতার অভিযোগ, নুসরতের ৫ মিনিটের সাংবাদিক বৈঠক স্ববিরোধিতায় ভরা। নুসরতই ওই সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। এরই পাশাপাশি শঙ্কুদেব অবিলম্বে তাঁর গ্রেফতারির দাবিও তোলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − eight =