মানিকের বিরুদ্ধে প্রথমে চার্জ গঠনের কথা বলেও পিছু হটল ইডি

মানিকের ক্ষেত্রে এক পা এগিয়েও পিছু হটল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বৃহস্পতিবার আদালতে গিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের কথা জানানো হয় ইডি-র তরফ থেকে। এরপরই ইডি-র আইনজীবীকে বেশ কিছু প্রশ্ন করেন নগর দায়রা আদালতের বিচারক। এরপর হঠাৎ-ই নিজেদের স্ট্যান্ড পয়েন্ট থেকে সরে দাঁড়াতে দেখা যায় ইডিক। এদিকে আদালত সূত্রে খবর,  বৃহস্পতিবারের শুনানিতে মানিকের জামিনের আর্জি জানানো হয়নি। আপাতত তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার নগর দায়রা আদালতের বিচারক।

আদালত সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার শুনানির প্রথমেই ইডির আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁরা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের জন্য প্রস্তুত। কারণ, ইডি চাইছে এই মামলায় পরবর্তী পদক্ষেপ করতে। বৃহস্পতিবারের শুনানিতে মানিকের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত চার্জ গঠনের আর্জি জানানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, এই মামলায় মানিকের আগে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন না করা হলেও মানিকের বিরুদ্ধে কী ভাবে চার্জ গঠনের কথা বলা হচ্ছে।

এরই প্রেক্ষিতে বিচারক ইডির আইনজীবীর কাছে জানতে চান, মানিক সংক্রান্ত মামলায় তাদের তদন্ত শেষ হয়েছে কি না সে ব্য়াপারে। এমনকী তদন্ত রিপোর্টও চান তিনি। এর একটু পরই আদালতে ইডি একটি নথি পেশ করে। সঙ্গে এও জানায়, চার্জ গঠনের আবেদন তারা করছে না। আদালত সূত্রে এ খবরও মিলেছে বৃহস্পতিবার তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত কোনও রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়নি।

এদিকে ইডি সূত্রে খবর, এই মামলায় সমস্ত অভিযুক্তের বিরুদ্ধেই চার্জ গঠন করতে চায় তারা। তাই একা মানিকের বিরুদ্ধে নয়, পরে সকল অভিযুক্তের বিরুদ্ধেই চার্জ গঠন করার জন্য আদালতে আবেদন জানাবে তারা। গত ২৮ জুলাই নিয়োগ মামলায় আর এক অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে ইডি। সেই চার্জশিটে নাম ছিল মানিকেরও। ১২৬ পাতার মূল চার্জশিটের ৭৫ নম্বর পাতার সাত নম্বর পয়েন্টে বলা হয়, মানিকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে গিয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। নির্দিষ্ট একটি ফোন নম্বর থেকে ২০১২ এবং ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ডও মানিককে পাঠিয়েছেন তিনি। সঙ্গে সুজয়কৃষ্ণ ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তি ছিলেন, এমনটা দাবি করে চার্জশিটে বলা হয়, কোনও রাজনৈতিক পদে না থাকলেও রাজ্যের শিক্ষা দফতর কিংবা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সঙ্গে যুক্ত না থাকা সত্ত্বেও মানিকের দফতরে অবাধ যাতায়াত ছিল সুজয়কৃষ্ণের। আর এই প্রভাবের কারণেই বহু চাকরিপ্রার্থী তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড-সহ অন্যান্য নথি তাঁকে পাঠাতেন বলে উল্লেখ করা হয় ওই চার্জশিটে। সঙ্গে চার্জশিটে এ-ও উল্লেখ করা হয় যে, চাকরিপ্রার্থীদের বাছাই করা এবং নিয়োগ করার বিষয়ে কথা বলতে ঘন ঘন মানিকের দফতরে যেতেন সুজয়কৃষ্ণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − six =