নুসরতের ঋণ নেওযার ঘটনায় আরও জলঘোলা করে দিলেন বিতর্কিত সংস্থার ডিরেক্টর রাকেশ সিং। সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট কেনার যে দাবি করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ নুসরত এবার সেই সংস্থার ডিরেক্টর জানালেন ওই সংস্থা থেকে নুসরতকে কোনও ঋণ দেননি। অর্থাৎ এটা স্পষ্ট যে, কেউ একজন সঠিক তথ্য দিচ্ছেন না। তবে কার বক্তব্য ঠিক তা নিয়েই আপাতত ধন্দ দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত গত সোমবার থেকে নুসরতকে নিয়ে ওই বিতর্কের সূত্রপাত। বিজেপির নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা অভিযোগ করেছিলেন, ২০১৪-’১৫ সালে ৪০০-র বেশি প্রবীণ নাগরিক ‘সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার’ নামে একটি সংস্থায় অর্থ জমা দেন। প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল। বদলে তাঁদের এক হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সাল নাগাদ তাঁদের জানানো হয়, ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা যাচ্ছে না। তাঁদের টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। অভিযোগকারীদের বক্তব্য, তাঁদের অনেকেই পুরো টাকা ফেরত পাননি। অনেকে কোনও টাকাই পাননি। অনেকে অল্প কিছু টাকা ফেরৎ পেয়েছেন।
এরপর বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন। যান ক্রেতাসুরক্ষা দফতরের কাছেও। আদালত কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনারকে (অপরাধ) তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেয়। প্রাথমিক ভাবে সেই তদন্ত রিপোর্টে ‘অনিয়ম’ পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। গত জানুয়ারি মাসে নুসরতকে আদালতে হাজিরা দিতেও বলা হয়েছিল। কিন্তু নুসরত আদালতে যাননি। প্রসঙ্গত, বুধবার নুসরতও বলেছিলেন, ওই বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন।
এরপরই অভিযোগকারীরা প্রথমে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে গিয়েছিলেন। শুভেন্দু মঙ্গলবারেই সে কথা জানিয়ে বলেছিলেন, তিনিই শঙ্কুকে বলেছিলেন, বিষয়টি নিয়ে ইডির দ্বারস্থ হতে। সেই মতো শঙ্কু ওই প্রবীণদের মধ্যে কয়েকজনকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে নিয়ে যান। এরপরেই বিষয়টি আবার প্রকাশ্যে এসে পড়ে। শঙ্কু যেমন নুসরতের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা এবং গ্রেফতারি দাবি করেন, তেমনই শুভেন্দু বলেন, নুসরতের ফ্ল্যাটটি ‘দুর্নীতি’র টাকায় কেনা। নুসরত অবশ্য সেই অভিযোগ বুধবার উড়িয়ে দেন। এদিকে এই ঘটনায় বুধবারেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না। এটা নুসরতের বিষয়। সেটা নুসরত নিজেই বলবে।’