রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় এবার আমূল পরিবর্তন আসতে চলেছে। অদূর ভবিষ্যতে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্যও আসতে চলেছে সেমেস্টার পদ্ধতি, এমনটাই সূত্রে খবর। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি মিলিয়ে দুই বছরে মোট চারটি সেমেস্টারে পরীক্ষা হবে। দ্বাদশ শ্রেণির দুটি সেমেস্টারের পরীক্ষার ভিত্তিতে উচ্চমাধ্যমিকের মূল্যায়ন করা হবে। যদিও কোন শিক্ষাবর্ষ থেকে এই নীতির বাস্তবায়ন করা হবে, সেই বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সূত্র মারফত এও জানা যাচ্ছে, এই নতুন নিয়মে উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে এমসিকিউ প্রশ্নের উপর বেশি জোর দেওয়া হবে। অর্থাৎ, এই নতুন নিয়ম কার্যকর হলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ব্যবস্থার পুরোটাই বদলে যেতে চলেছে।
তবে জল্পনা শুরু হয়েছে, ঠিক কীরকম হবে সেমেস্টার ব্যবস্থার উচ্চমাধ্যমিক তা নিয়ে। এখনও পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে, সেমেস্টার ব্যবস্থা কার্যকর হলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হবে দু’টি ভাগে। অর্থাৎ, দ্বাদশ শ্রেণির দু’টি সেমেস্টারের পরীক্ষাই উচ্চমাধ্যমিকের অঙ্গ। দু’টি সেমেস্টারের পরীক্ষার জন্যই আলাদা আলাদা নম্বর বরাদ্দ থাকবে। সেই পরীক্ষাগুলিতে প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে তৈরি হবে উচ্চমাধ্যমিকের চূড়ান্ত ফল। প্রসঙ্গত, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি হিসেবে চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার দিনই সেমেস্টারে উচ্চমাধ্যমিক নেওয়ার বিষয়ে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন।
শুধু একাদশ-দ্বাদশ বা উচ্চমাধ্যমিকের পঠন-পাঠন ব্যবস্থাতেই নয়, রাজ্যের সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থাতেই আমূল পরিবর্তন আনতে সচেষ্ট রাজ্য সরকার। রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলগুলিতে অস্বাভাবিক ফি-বৃদ্ধি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে আদালতে মামলাও হয়। সেখানে হাইকোর্টের কড়া ধমকের মুখে পড়তে হয় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে। এমন অবস্থায় এবার স্বাস্থ্য কমিশনের মতো শিক্ষা কমিশনও তৈরি করতে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। মূল লক্ষ্য, বেসরকারি স্কুলেগুলির অস্বাভাবিক ফি বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা। পাশাপাশি বয়স্ক-শিক্ষাতেও জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। বয়স্কদের শিক্ষার জন্য রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অ্যাডাল্ট লিটারেসি সেন্টার খুলতে চায় রাজ্য। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি রাজ্যের পার্শ্ব শিক্ষকদের মানোন্নয়নের জন্যও নীতি তৈরি করবে সরকার। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলগুলিতে ছাত্র ও শিক্ষকের অনুপাত যাতে ঠিকঠাক জায়গায় আনা যায় সেই টার্গেটও নিচ্ছে সরকার।