আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে বুধবারই হাসপাতাল থেকে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ফিরবেন তিনি। তবে তাঁর বাড়িতে পা রাখার আগে চিকিৎসকদের তরফে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যায় তদারকি করতে যায় একটি দল। কারণ, বুদ্ধদেববাবু বাড়িতে পা রাখার আগে সেই দলের সদস্যেরা মঙ্গলবার বেলার দিকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যান। অসুস্থ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বিছানা কোথায় থাকবে,কোন জায়গায় রাখলে চিকিৎসার নানাবিধ সরঞ্জাম রাখতে সুবিধা হবে এ সব দেখে আসেন তাঁরা।
হাসপাতাল সূত্রে খবর,বুদ্ধদেবের জন্য নতুন বাইপ্যাপের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাঁর যে বাইপ্যাপটি ছিল,সেটি প্রায় সাড়ে তিন বছরের পুরনো। এ ছাড়া একটি ‘কার্ডিয়াক মনিটর’-ও থাকবে। যার মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা,রক্তচাপ,হৃদ্স্পন্দন দেখা যাবে। এতে ঠিক ভাবে বুদ্ধদেবের শারীরিক পরিস্থিতির উপরও নজরও রাখা সম্ভব হবে আর সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করাও যাতে যায় তারই জন্য এই ব্যবস্থা। এ ছাড়া জীবাণুমুক্তকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অন্যদিকে হাসপাতাল সূত্রের খবর, এগারো দিন ধরে মেডিক্যাল বোর্ডের যে ১১ জন চিকিৎসক বুদ্ধবাবুকে দেখেছেন তাঁদের কেউই কনসালটেশন ফি নিতে চাননি। সূত্রের খবর, ১১ দিনে বুদ্ধবাবুর চিকিৎসার বিল হয়েছে প্রায় সাড়ে দশ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে পাঁচ লক্ষ টাকা সিপিএম ইতিমধ্যে মিটিয়ে দিয়েছে। বাকি টাকাও দলের তরফেই মেটানো হবে বলে খবর।
গত ২৯ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। হাসপাতালে ভর্তির ১১ দিন পরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা অনেকটাই ভাল। তিনি চিকিৎসক এবং তাঁকে দেখতে আসা ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথাও বলছেন। যদিও এখনও তাঁকে নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেটরি সাপোর্টেই রাখা হয়েছে।
এরপর মঙ্গলবার বৈঠক বসে বুদ্ধদেবের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল বোর্ড। সেখানে বাড়ি ছাড়ার পর কী কী করতে হবে,মূলত তা নিয়েই আলোচনা হয়। আলিপুরের হাসপাতালের তরফ থেকে আপাতত পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটে চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় পরিষেবা দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। ডাক্তারি পরিভাষায় ‘হোম কেয়ার’। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পরিচর্যা এবং দেখভালের জন্য যাঁরা যাবেন তাঁদেরও আলাদা করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সংক্রমণ কাটিয়ে সেরে উঠলেও নতুন করে আবার সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে বুদ্ধদেবের। সে ক্ষেত্রে তাঁর বাড়িকে ‘স্যানিটাইজ়’ করার কথা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। বাড়িতে যে বাইপ্যাপ যন্ত্র বুদ্ধদেব ব্যবহার করতেন তা আলিপুরের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।