শীর্ষ আদালতের নির্দেশ ছিল যৌন নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতিতার নাম কোনও মতেই কোথাও প্রকাশ করা যাবে না। এমনকি,পকসো আইনের মামলাতেও অভিযোগপত্র,এফআইআর নথি অথবা শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্টের কোথাও-ই নির্যাতিতা নাবালিকার নাম রাখা যাবে না। এই প্রসঙ্গে শূর্ষ আদালতের নির্দেশ ছিল,তদন্তকারী আধিকারিকরা এফআইআর কিংবা চার্জশিটে নির্যাতিতার নাম উল্লেখ করতে পারবেন না। মামলা সংক্রান্ত নথি সংরক্ষণের সময়ে মুখবন্ধ খামে রাখতে হবে। নির্যাতিতার নাম আদালতকে জানাতে হলে তা-ও পৃথক মুখবন্ধ খামে জমা দিতে হবে। এমনকি, গোপন জবানবন্দি দেওয়ার সময়েও নির্যাতিতার নাম রেকর্ড করা যাবে না। এর পাশাপাশি পকসো আইনে দায়ের হওয়া মামলায় মেডিক্যাল বা ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্টেও নির্যাতিতার নাম লেখা যাবে না বলে নির্দেশিকাতে বলা হয়।
তবে এই নির্দেশের পরেও তা অমান্য করতে দেখা গেছে কলকাতা পুলিশ আধিকারিকদের। নজরে এসেছে কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন থানার তদন্তকারী আধিকারিকেরা শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ অমান্য করে কেস ডায়েরিতে নির্যাতিতার নাম উল্লেখ করেছেন। এরপরই লালবাজারের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পুলিশ আধিকারিকেরা যাতে এই ভুল আর না করেন,তার জন্য কলকাতা পুলিশের প্রতিটি থানার আধিকারিকদের এবার থেকে যৌন নির্যাতন এবং পকসো আইনের মামলা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। লালবাজার সূত্রে খবর,সম্প্রতি এই প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। মাসে দু’দিন এই প্রশিক্ষণ হবে। প্রতিটি থানা থেকে এক জন করে অফিসার প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন।
একইসঙ্গে লালবাজার সূত্রে এও জানানো হয়েছে,আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, যৌন নির্যাতন কিংবা পকসো মামলার কোনও নথিতেই যে নির্যাতিতার নাম লেখা যে যাবে না সে ব্যাপারে ওসিদের উদ্দেশ্যে আগেই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। এরপরও কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হতে দেখা গেছে।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান,‘নির্যাতিতার পরিচয় কোনও ভাবেই প্রকাশ করা যায় না। কেস ডায়েরিতে তো বটেই, তাঁর নাম-পরিচয় চার্জশিটেও রাখা যাবে না। আদালতের নির্দিষ্ট করা এই গাইডলাইন মেনে চলার জন্য সকলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’সঙ্গে এও জানান,নির্যাতিতাদের সুরক্ষার কথা ভেবেই আদালত এই পদক্ষেপ করেছে।