‘বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে খুনের খেলা খেলেছে তৃণমূল কংগ্রেস’, বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেত্রীয় পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলনের সূচনা করতে গিয়ে এমনটাই দাবি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির।শনিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর পাশাপাশি পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদের কর্মীদের ক্ষমতা ও কাজের এক্তিয়ার বোঝাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এও জানান, ‘জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ রাজ্যের ক্যাবিনেটের থেকেও বেশি ক্ষমতা রাখেন। অনেক কাজ করতেও পারেন।’ এরপরই বিজেপির আশ্বাস এবং মনোবল বাড়াতে তিনি এও বলেন, ‘কার্যকর্তা হিসাবে আপনারাও জেলায় জেলায় নিজের কাজ, ভাল ব্যবহার দিয়ে আপনারা সাধারণ মানুষের মন জিতছেন। সেই কারণে মানুষও আপনাদের উপরে বারংবার আস্থা প্রকাশ করছে। প্রয়োজন পড়লে বিজেপির কর্মীরা নিজেদের রক্ত দিয়ে লড়াই করেছেন।’ এরই রেশ টেনে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পটভূমির প্রেক্ষিতে নরেন্দ্র মোদি এও বলেন, ‘বিজেপি কর্মীরা, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি কর্মীরা যেভাবে ভারতমাতার জন্য, রাজ্যের উন্নতির জন্য সংঘর্ষ চালিয়ে যাচ্ছেন, তা এক রকম সাধনা। নিজেদের তিলে তিলে জ্বালিয়ে পশ্চিমবঙ্গের হারানো গৌরব ফেরানোর চেষ্টা করছেন। পশ্চিমবঙ্গে সদ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে, এই নির্বাচনে তৃণমূল খুনের খেলা খেলেছে। গোটা দেশ তার সাক্ষী রয়েছে।’
পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের সন্ত্রাসের বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এও বলেন, ‘তৃণমূলের প্রথম কৌশলই হল নির্বাচনের জন্য সময় না দেওয়া। এত তাড়াতাড়ি নির্বাচনের দিন ঘোষণা করবে যে প্রস্তুতি, মনোনয়ন জমা দেওয়ার সুযোগই মিলবে না। বিজেপি বা কোনও বিরোধী দলকে মনোনয়ন পত্র জমা না দিতে পারেন, তার জন্য সবরকমের চেষ্টা চালানো হয়। এটা শুধু বিজেপির সঙ্গেই নয়, অন্যান্য দলের সঙ্গেও হচ্ছে। যদি কেউ বুদ্ধি করে মনোনয়ন জমাও দেন, তবে তাদের প্রচার করতে দেওয়া হয় না। পাশাপাশি ভোটারদের ভয় দেখানো, বিজেপি কর্মীদের পরিবারকে বাড়ি থেকে বেরতে দেওয়া হয় না।’
ভোট সন্ত্রাসের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী এও বলেন, ‘নির্বাচনের সময়ও ধাপ্পাবাজি করা হয়। ছাপ্পা ভোট দেওয়া হয়।বুথ দখলের জন্য গুন্ডাদের ভাড়া করা হয়। ব্যালট নিয়ে পালিয়ে যায়। ভোট গণনার সময়ও বাধা দেওয়া, বিজেপি কর্মীদের বুথে বসতে দেওয়া হয় না।’
তবে পঞ্চায়েতের ফল নিয়ে খুশি প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাঁর চোখে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের আশীর্বাদ পেয়েছেন বিজেপি কর্মীরা এমনাটই জানান তিনি।কারণ, বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। এর পাশাপাশি মোদি এও জানান, ‘ভোটের ফলাফলের পরও বিজেপিকে বিজয় মিছিল করতে দেওয়া হয় না। মিছিলে হামলা করা হয়। প্রাণঘাতী হামলা করা হয়। এটাই তৃণমূলের রাজনীতি। বাংলায় আদিবাসী ভাইবোনেদের কীভাবে প্রতারিত করা হচ্ছে, তা আমরা জানি। এরপরও বিজেপির কর্মীরা জয়ী হয়েছেন। তাদের আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
এদিন প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য রাখতে গিয়ে এও জানান, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার কাজ করতে দেয় না।’ আর এই প্রসঙ্গ টেনে তিনি এও মনে করিয়েদেন, রাজ্য সরকারের বাধা দেওয়ার পরও পশ্চিমবঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে ৪৫ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরি করা হয়েছে।