যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার প্রথম বর্ষের পড়ুয়া স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর রহস্যমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তনী ও দুই পড়ুয়াসহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় আগেই তাঁর পরিবারকে উপযুক্ত বিচার দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার স্বাধীনতা দিবসের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে এসে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনার পুলিশি তদন্ত নিয়ে মুখ খুললেন নগরপাল বিনীত গোয়েল।
এদিন তিনি জানান, ‘এক প্রাক্তনী সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকদের দিয়ে গোটা তদন্ত প্রক্রিয়ায় নজরদারি চালানো হচ্ছে। জয়েন্ট সিপি ক্রাইম নিজে গিয়ে ধৃত ও অন্যান্যদের জিজ্ঞাসবাদ করেছেন এবং তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখেছেন। ডিসি এসএসডি ও হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দারাও খুব দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন। দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করার চেষ্টা করছি আমরা। ময়নাতদন্তের জন্য বোর্ড তৈরি করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সব কিছুই করা হয়েছে।’
এদিকে স্বপ্নদীপের রহস্যমৃত্যুর ঘটনার যাদবপুর থানা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডু। এই ঘটনার পর ফোনে তাঁর সঙ্গে কথে বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে, রামপ্রসাদকে এই আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের সঙ্গে কথা বলার পর সংবাদমাধ্যমকে স্বপ্নদীপের বাবা বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী ফোন করে আমাকে সবধরনের সাহাযের আশ্বাস দিয়েছেন। ওঁনার সঙ্গে কথা বলে আমার ভালো লেগেছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন তিনি আমার সন্তাকে ফিরিয়ে দিতে পারবেন না, কিন্তু সুবিচারের ব্যবস্থা করবেন। মুখ্যমন্ত্রী দৃঢ় মনোভাব দেখে আমি অনেকটাই বল পেয়েছি।’ অন্যদিকে স্বপ্নদীপের বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে খুন ও সম্মিলিত অপরাধের ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। তদন্তে নেমে সৌরভ চৌধুরী নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তনীকে গ্রেফতার করা হয়। সৌরভকে জেরা করে আরও দুই পড়ুয়ার হদিশ পায় পুলিশ। শনিবার দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া দীপশেখর দত্ত ও মনতোষ ঘোষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উল্লেখ্য, এই ঘটনায় আরও কয়েকজন পড়ুয়া যুক্ত রয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ধৃতদের জেরা করে তাঁদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে বলে জানা গিয়েছে। স্বপ্নদীপকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল, তদন্তে নেমে এক প্রকার নিশ্চিত পুলিশ আধিকারিকরা। এই ঘটনার তদন্তে নতুন কোনও দিক উঠে আসে কি না সেটাই দেখার।