উপাচার্য থাকলে সুবিধাই হত, জানালেন যাদবপুরের রেজিস্ট্রার

‘সব সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং অনুমোদন দেওয়ার ক্ষমতা তো আমাদের হাতে থাকে না। উপাচার্য না থাকলে তাই সমস্যা হয়। উনি থাকলে সুবিধা তো হতই।’ , অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির ব্যর্থতাই যাদবপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর কারণ কিনা তারই জবাবে এমনটাই জানালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু।

এখানে মনে করিয়ে দেওয়া শ্রেয় যে, গত মার্চেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সুরঞ্জন দাস। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছিলেন তিনি। পরে ওই পদে অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে যাদবপুরেরই ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক অমিতাভ দত্তকে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। কিন্তু গত ৪ অগাস্ট রাজ্যপালের নির্দেশে তিনিও ইস্তফা দেন। পরে জানা যায় রাজ্যপালই তাঁকে বলেছেন ইস্তফা দিতে। এরফলে ফের খালি হয়ে যায় যাদবপুরের উপাচার্য পদ। এর সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। সোমবার সেই দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের মন্তব্যে সেই কারণে একটা প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হল তবে কি পরোক্ষে উপাচার্য নিয়োগের দায় রাজ্যপালের দিকেই ঠেলছেন কি না তা নিয়ে।

এদিকে অমিতাভবাবু সরে দাঁড়ানোর পাঁচ দিনের মাথায় অর্থাৎ গত ৯ অগাস্ট, বুধবার ঘটে ওই দুর্ঘটনা। যাদবপুরের মেন হস্টেলের তিনতলার বারান্দা থেকে পড়ে মারা যান বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ। অভিযোগ ওঠে র‌্যাগিংয়ের। সঙ্গে জড়িয়ে যায় হস্টেল পড়ে থাকা প্রাক্তনীদের ‘অত্যাচার’-এর কথাও। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই আঙুল ওঠে কর্তৃপক্ষের দিকে। কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে এবং নিয়মের পরোয়া না করে কী ভাবে দিনের পর দিন আইন ভেঙে হস্টেলে পড়ে থাকতেন এই প্রাক্তনীরা তা নিয়ে সোমবার প্রশ্নের মুখে পড়তে দেখা যায় রেজিস্ট্রারকে।  পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। তারই জবাবে উপাচার্যের না থাকার প্রসঙ্গ টেনে আনেন স্নেহমঞ্জু। তিনি বলেন, ‘উপাচার্য থাকলে এবং এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠক নিয়মিত করতে পারলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হত। এ ভাবে সবটা আমাদের উপর চলে আসত না। উপাচার্য না থাকলে অনেক ক্ষেত্রে অনুমোদন পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে।’

এদিকে আবার যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যর্থতার জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্যপালকেই দায়ী করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যাদবপুরের ঘটনায় যখন বিজেপির তরফে মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উপর অভিযোগ আনা হচ্ছে, তখনই তিনি বলেছিলেন, বিশ্ববিদ্য়ালয়ের প্রসাশনিক দায়িত্ব শীর্ষে এখনও রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল। ফলে দায় যদি কারও উপর বর্তায়, তবে তা বর্তাবে রাজ্যপালের ওপরেই। এদিকে সম্প্রতি রাজ্যের অনেকগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাথায় অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রী যাদবপুরের এই ঘটনায় রাজ্যপালের সেই সিদ্ধান্তকেই মনে করিয়ে দেন। সোমবারও দেখা গেল যাদবপুরের রেজিস্ট্রারের গলাতেও সেই একই সুর।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 5 =