যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় আগেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় তথ্য সংগ্রহ করল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। বুধবার দুপুরে কমিশনের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ে যান এসপি শান্তি দাস। বেশ কিছুক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এই প্রসঙ্গে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের এসপি শান্তি দাস জানান,‘আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। যে ঘটনা ঘটেছে, সেটা সম্পর্কে ওঁদের বক্তব্য শুনেছি। এ বার আমরা নিজেদের মতো করে কাজ করব। আরও বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলার পর রিপোর্ট তৈরি করব।’ তবে একইসঙ্গে তিনি এও জানান, তাঁরা যে যে তথ্য চেয়েছিলেন, তার সবগুলি পাননি। সেগুলি সংগ্রহ করতে হবে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী র্যাগিং সংক্রান্ত নির্দেশাবলি পালন হয়েছে কি না, ওই ঘটনায় যা যা করণীয়, তা করেছেন কি না, সে সবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের তরফ থেকে।
উল্লেখ্য, গত ৯ অগাস্ট বুধবার গভীর রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচ থেকে নগ্ন এবং অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া যায় বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে। বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’তে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। বুধবারেই গ্রেফতার হয়েছেন ৬ জন। অন্য দিকে, বুধবারেই নদিয়ার বগুলায় মৃত ছাত্রের বাড়িতে যায় রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি দল। ওই দলে ছিলেন তিন মন্ত্রী এবং এক সাংসদ। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং যুব তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ কথা বলেন মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য মৃতের মাকে বলেন, ‘‘বিষয়টি নিজে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দোষীদের কেউ ছাড় পাবেন না।’ পাশাপাশি ওই বাড়ির ছোট ছেলের পড়াশোনার বিষয়টি তাঁরা দেখবেন বলে আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী।
এদিকে বুধবার দুপুরে লালবাজারে তলব করা হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এবং ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে। স্নেহমঞ্জু গেলেও রজত লালবাজারে পৌঁছননি। তিনি পুলিশকে জানান, বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। তাঁকে ঘেরাও করে রাখা হয়েছে।