ধৃতদের এনে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার পুনর্নির্মাণ কলকাতা পুলিশের

যাদবপুরের মেন হস্টেলে গিয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় পুননির্মাণ করল কলকাতা পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে তদন্তকারী অফিসাররা মেন হস্টেলে যান। হস্টেলের যে ব্লকে ঘটনাটি ঘটেছিল সেখানে গিয়ে গোটা এলাকা দেখেন তাঁরা। ছাত্রমৃত্যুর দিন ঠিক কী ঘটেছিল তা জানতেই এই পুননির্মাণ করা হচ্ছে। যাদবপুর থানা সূত্রে খবর, এই পুনর্নির্মাণ কাজের জন্য গ্রেফতার হওয়া এক ছাত্রকে শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে নিয়ে আসা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ধাপে ধাপে বাকি ধৃতদেরও আনা হবে। সকলের বয়ান মিলিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা।

কারণ, হস্টেলে প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্য়ু ঠিক কী করে ঘটল তার তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের একন প্রধান লক্ষ্যই হল  গত ৯ অগাস্ট অর্থাৎ ঘটনার দিন রাতে ঠিক কী ঘটেছিল হস্টেলে তা বের করা। এর জন্য পুননির্মাণের করার ঘটনা শুরু হয় শুক্রবার থেকে। আস সেই কারণে শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার বাসিন্দা তথা যাদবপুরের প্রাক্তন পড়ুয়া ধৃত সপ্তক কামিল্লাকে শুক্রবার নিয়ে আসা হয় ঘটনা পুনর্নির্মাণ করার জন্য।

এদিকে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের হাতে এ তথ্যও এসে পৌঁছেছে হস্টেলে সিনিয়রদের উপস্থিতি ও অনুমতি ছাড়া প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা ফোনে পরিবার বা অন্য কারও সঙ্গে কথা বলতে পারত না। প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জিজ্ঞাসাবাদের পরই এমন-ই তথ্য জানতে পারেন তদন্তকারীরা। সঙ্গে এ তথ্যও হাতে পান যে, হস্টেলের জুনিয়রদের জন্য রোস্টার তৈরি করা হত, কে কবে টয়লেট পরিষ্কার করবে। সিনিয়রদের ঘর গুছিয়ে দেওয়া, ঘর পরিষ্কার করে দেওয়া, টয়লেট পরিষ্কার করে দিতে হত জুনিয়রদের।

এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরও তিন জন ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। যাদবপুর থানায় ডেকে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এদের মধ্যে তিন জন প্রাক্তন পড়ুয়া এবং এক জন বর্তমান পড়ুয়া। ঘটনার দিন এরা হস্টেলে ছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

তবে পাশাপাশি কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত ন’জনের বক্তব্যে একাধিক অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। এক এক জন এক এক রকম কথা বলছেন বলে দাবি পুলিশের। কে সঠিক কথা বলছেন তার খোঁজে তাই এ বার ধৃত ন’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাঁদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।  এদিকে শুক্রবার ক্যাম্পাসে এসে কোনও মন্তব্য করতে দেখা গেল না যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে। তিনি জানান, ‘যেহেতু এখন তদন্ত চলছে, বিভিন্ন তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। আমি অত্যন্ত ব্যস্ত। আমাকে রিপোর্ট তৈরি করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় কোনও চ্যানেল বা কোনও জায়গায় মন্তব্য করার মতো সময় নেই। তদন্তের স্বার্থে কোনো মন্তব্য করব না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × five =