পুজোর পরই ছাত্র সংসদ নির্বাচন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে এমনটাই জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, বাংলার সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নির্বাচন থমকে রয়েছে। ছাত্র সংসদের নির্বাচন করানোর বিষয়ে রাজ্যের সদিচ্ছার কথা কয়েক মাস আগেই শুনিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তবে ছাত্র সংসদের নির্বাচন এখনও হয়নি। সোমবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশ থেকে ফের একবার ছাত্র ভোট নিয়ে ইতিবাচক বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের ছাত্র সংগঠনের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা জানালেন, পুজো মিটলেই ছাত্র সংসদের নির্বাচন করাতে আগ্রহী তিনি। এই প্রসঙ্গে এদিন তিনি জানান, ‘আমি ইলেকশন করিয়ে দেব। পুজো হয়ে যাক।’ মমতার বক্তব্য, বিধানসভায় একটি বিলের সংশোধনী আনা প্রয়োজন। সেটি হয়ে গেলেই ছাত্র সংসদের ভোটের আয়োজন করবে রাজ্য। এরই রেশ টেনে মুখ্যমন্ত্রী এদিনের মঞ্চ থেকে এও বলেন, ‘এখন যে বিলটি রয়েছে, সেটি সেন্ট জেভিয়ার্সের কায়দায়। ওটা রাজনৈতিক নির্বাচনের নয়। ওই বিলটি বিধানসভার পরবর্তী অধিবেশনে সংশোধন করব। পুজোর ঝামেলা মিটে যাক, তারপর আপনাদের নির্বাচন করব।’
প্রসঙ্গত, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছাত্র রাজনীতি করে উঠে এসেছে। তখন অবশ্য তিনি ছিলেন কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদে। নিজের জীবনের ছাত্র রাজনীতির অভিজ্ঞতাও এদিন তুলে ধরেন মমতা। ছাত্র রাজনীতির করার সময়ে তাঁর উপরে সিপিএম ‘বন্দুক, বোমা নিয়ে তাড়া করেছিল’ বলে সুর চড়ালেন তৃণমূল নেত্রী। কীভাবে একটি মিষ্টির দোকানের কর্মচারীরা সেদিন তাঁকে বাঁচিয়েছিলেন, সেই কথাও এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে জানান এদিন। সঙ্গে এও বলেন, সেদিন ওই মিষ্টির দোকানের কর্মচারীরা তাঁকে না বাঁচালে, তিনি সেদিনই মারা যেতেন।
সেই সব দিনের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় ছাত্র ভোটকে ঘিরে, এদিন দলের ছাত্র সংগঠনকে সেই বার্তাও দিয়ে রাখেন তৃণমূল সুপ্রিমো। যদিও মমতার দাবি, তাঁর সংগঠনের ছেলে-মেয়েরা কোনও গন্ডগোল পাকায় না। বিরোধী দলের ছাত্র সংগঠনগুলিই গোলমাল পাকায়। এদিন পুলিশ-প্রশাসনকেও কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, ছাত্র নির্বাচন ঘিরে যাতে কোথাও কোনও গন্ডগোল না হয়। মমতার স্পষ্ট কথা, বহিরাগত কেউ যেন কলেজগুলিতে ঢুকতে না পারে ছাত্র সংসদের ভোটের সময়। বুঝিয়ে দিলেন, কোনও গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবে না ছাত্র সংসদ নির্বাচনে। একইসঙ্গে ভোটের সময় দলের ছাত্র সংগঠনকে সবরকম প্রয়োজনীয় সাহায্য করার জন্যও দলের নেতা-নেত্রীদের দিয়ে রাখলেন মমতা। বললেন, ‘আপনারা প্রত্যেকে এদের সাপোর্ট দেবেন। মনে রাখবেন, ছাত্র পরিষদের নির্বাচনটি আপনাদের নির্বাচন। ওদের পাশে দাঁড়াতে হবে। দরকার হলে ফ্ল্যাগ, ঝালমুড়ি কিনে দিতে হবে।’ ইন্দ্রনীল সেন, বাবুল সুপ্রিয়রা যাতে প্রয়োজনে ছাত্র সংগঠনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও করে দেন এদিন তেমনও পরামর্শ দিতে দেখা যায় তাঁকে।