তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ২৫ তম প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানাতেও কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত আর তাদের বিভিন্ন কার্যকলাপ। সোমবারের এই অনুষ্ঠানের আগে জনৈক ব্যক্তির থেকে মেসেজ পেয়ে ক্ষুব্ধ হতে দেখা গেল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তিনি জানান, ‘আমাকে মেসেজ পাঠিয়ে বলছে ভোটের আগে গ্রেফতার করা হবে অভিষেককে।’ কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রতি ক্ষোভ উগরে মমতা বলেন, ‘ আমি অনেক সরকার দেখেছি কিন্তু এরকম প্রতিশোধস্পৃহামূলক সরকার দেখিনি।’
এরপরই ইডি তদন্ত নিয়ে সোচ্চার হন তৃণমূল সুপ্রিমো। লিপস অ্যান্ড বাউন্স-এ ম্যারাথন তল্লাশি নিয়ে আক্রমণের সুরে মমতা বলেন,’কেন দেখেননি আপনারা, কী করছে ওঁরা। নিজেরা ইচ্ছে মতো অভিষেকের অফিসে ঢুকেছে। কাউকে কিছু বলার প্রয়োজন মনে করেননি। নিজের ইচ্ছামতো ঢুকে গিয়েছি, যা খুশি করছে। অভিষেকের কম্পিউটার থেকে সব ফাইল বের করে নিয়েছে। তারপর নিজেরা কতগুলি ফাইল তৈরি করে নিয়ে গিয়েছে। আর সেগুলো ওখানে ভরে দিয়েছে। তোমরা যদি কম্পিউটার ওস্তাদ হও। তাহলে আমরাও মাস্টার। আমরা সব বের করে নিয়েছি একেবারে টাইম ধরে, যে এগুলো তোমরা ঢুকিয়েছ। ওদের কম্পিউটারে এগুলো ছিল না।’
প্রসঙ্গত, ইডি-র তল্লাশির পর অফিসে কম্পিউটারে অজানা ১৬টি এক্সেল ফাইল দেখতে পান লিপস অ্যান্ড বাউন্সের কর্মীরা। এরপরই লালবাজারের সাইবার পুলিশের দ্বারস্থ হন কোম্পানির কর্মীরা। সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এখানেই শেষ নয়, তৃণমূলের তরফে অভিযোগ, যিনি অভিযোগ লিখেছেন তাঁকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘যে রিপোর্ট লিখেছে, তাঁকেও বলছে গ্রেফতার করব। হ্যাঁ সবাইকে গ্রেফতার করে নাও তোমরা।’
এখানে একটা কথা বলতেই হয়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চিকিৎসা করিয়ে কলকাতা ফেরার পরই ২৫ অগাস্ট নিউ আলিপুরে ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর অফিসে হানা দেয় ইডি। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র অর্থাৎ কালীঘাটের কাকু-এর গ্রেফতারির সূত্র ধরে তল্লাশি চালান ইডি আধিকারিরা। ১৮ ঘণ্টা তল্লাশি শেষে পর সংস্থার কম্পিউটারে অচেনা ফাইল দেখে অভিযোগ করেন ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর কর্মী চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ দু’টি কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক খতিয়েও দেখে। এরই মধ্যে ইডি-এর তরফে জানানো হয়, তল্লাশি অভিযান চলাকালীন ইডি-র এক অফিসার যাদবপুরের র্যাগিংয়ের ঘটনার জেরে তাঁর নিজের মেয়ের জন্য উদ্বেগ বশত কিছু সার্চ করেন। ওই অফিসারের মেয়ে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের জন্য হস্টেল খুঁজছিলেন, সেই সংক্রান্ত ফাইলই ওই কম্পিউটারে ডাউনলোড হয়। কোনও অনৈতিক কিছু ডাউনলোড হয়নি বলে দাবি ইডি-এর।